Friday, February 13, 2015

“যত মত, তত পথ”

যত মত তত পথ, এই উধিৃটি সনাতান ধর্মের গুরু  রামকৃষ্ণ পরমহংসের।শ্রী রামকুষ্ণ বাংলায় লেখা পড়া জানতেন অতি সামান্য। কোন রকমে ধর্মিয় বই পুস্তক পড়তে জানতেন।কিন্তু তাঁর শিষ্যরা অনেকেই উচ্চ  ডিগ্রিধারি।তাঁর প্রধান শিষ্য স্বামি বিবেকানান্দ তো দর্শণের উপর ডিগ্রি নিয়েছিলেন।

সুপ্রাচিন গ্রীস দা্র্শণিক প্লেটোর আগে অনেক দার্শনিকেরই প্রাথমিক শিক্ষা ও ছিল না, এমন কি নিরক্ষরও ছিলেন রিতিমত, কিন্তু তাদের   তত্ত ও তাত্বিকের প্রভাব আজো আধুনিক বিশ্বে আধুনিক মানুষের উপর পড়ে আছে।যেমন সক্রেটিস, কনপুসিয়াস, বা চানক্য এর  কথাই ধরেন। তারা সবাই নিরক্ষর হলেও তাদের এক একটি বাণী বা উধিৃতি আমার কাছে মনে হয় ঐশি বাণীর মত।

সেকালের শিষ্য প্লেটো যেভাবে তার গুরু মহামতি সক্রেটিসের তত্ব উপাত্ব লিপিবদ্ধ করে গুরুকে সর্বকালের সেরা দার্শনিক হিশেবে অমর করে রেখেছেন, ঠিক তেমনি একালের স্বামি বিবেকানন্দও তার গুরু  রাম কৃষ্ণের উপর বই পুস্তক ও বক্তিতা বিবৃতি দিয়ে গুরুকে অমর করে রেখেছেন। আজ সারা বিশ্বে  তিন শতাধিক রাম কৃষ্ণ মঠ বা মন্দির প্রতিষ্টিত হযেছে।

রাম কৃষ্ণের “যত মত তত পথ” এই বাণীটি আমার খুব প্রিয়। যদিও তিনি ধর্ম গত ভাবে এই তত্বটি দিয়েছেন, ততাপি আমার কাছে মনে হয় এই তত্তটি  রাজনৈতিক সামাজিক এবং সাংসারিক ও সর্বখেত্রেই প্রযজ্য।

পৃথিবীর সব মানুষই ভাববাদি।সবাই চেতনে অবচেতনে কম বেশি ভাবনা করে, কল্পনা করে, স্বপ্ন দেখে, কিন্তু সবার ভাবনা কোন দিনও এক হতে পারে না। সবার অভিজ্ঞতাও এক বা সমান না। একা একা ভেবে চিন্তে একাই একটা কাজ সমাধা করা এক ধরনের বোকামি।কারণ হযতো কাজটা সমাধা করার পরেই আপনি  ধরতে পেরেছেন গোড়াই  মস্তবড় এক গলদ বা ভূল।তাই যদি আগে ভাগেই বন্ধু বান্দব দু এক জনের পরামর্শ নিয়ে কাজটা করতে পারতেন, তা হলে হয়তো কম শ্রমে কম কষ্টে এবং কম খরচে অতি সহজেই কাজটা করতে পারতেন।মনে অনাবিল  শান্তি ও আনন্দও পেতেন।

উপরের কথা গুলি বলার উদ্যেশ্য আমার একটাই।দীর্ঘ দিন যাবত প্রবাস নামের বনোবাসে নির্বাসিত জীবন যাপন করছি। প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসে যখন শুতে যাই তখন শ্রমের ব্যথায় দু চোখে  আর গুম আসেনা।বিছানায় পড়ে এপাশ ওপাশ করি। মনটা পড়ে থাকে প্রিয় জন্ম ভূমি বাংলাদেশের প্রতি।হৃদয় মনিটরে ভেসে উঠে প্রিয় জনদের কখানা মুখ।বার বার মোটা মোটা জলে চোখ দুটি ঝাপসা ঝাপসা হয়ে উঠে।আই প্যাড বা আই ফোন অন করি।খবর পড়ি, ইউ টিউব দেখি, খবর ঠকশো কোন খানেই বালাই নেই,ভালো কথা নেই, ন্যয় বা উচিত কথা নেই। সব সালারাই চাটুকার দালাল, দলকানা, রাতকানা হারামির দল।বুদ্ধিজিবী আর শুশিল সমাজ নাম ধারি ঐ সুয়োরের বাচ্ছাদের মধ্যে গর্ধবের কান্ডজ্ঞানও নাই।

ক্রোদে বার বার আমার হাতের মুষ্টি কষে আসে। মন চা্য় এখুনি উড়াল দিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে সংসদ ভবনের উপর কিংবা কোন উঁচু টাওয়ারের উপর  দাঁড়িয়ে শুশিল সমাজের মা মাসি তুলে চিৎকার করে বকি দেই। সা---লা--- তোগো---------মা বোন---কে--


আবার ভাবি বকে চকে মেরে কেটে কি লাভ? মানুষ যদি নিজেই না ভাবে মানুষ কেন হলাম?

মানুষ হয়ে যারা মানুষকে নির্মম ভাবে রগ কেটে গলা কেটে কল্লা কেটে আগুনে পুড়ে হত্যা করে, তারা কোন দিন মানুষ হতে পারেনা। তারা হাইওয়ান, হাইওয়ান জংলী জানোয়ার এর চেয়েও তারা নিকৃষ্ট।

পৃথিবীর সব মানুষের প্রথম পরিচয় হউক আমি মানুষ। তার পর হউক ধর্ম কর্ম গোত্র বংশ ইত্যাদি।

                                            -------ফারুক, জার্মানী।

No comments:

Post a Comment

অজ্ঞসব জনপ্রতিনীধি,

সত্যই শক্তি, সত্যই সুন্দর,