বোকা মেয়েরা,
মেয়েগুলি এত বোকা হয় কি করে--?
১,আমার এক নিকট আত্মিয়।বড় ভাইও বটে।নাম বলছিনা।ভাইটার জীবনটা ড্রামাটিক সিনেমার কোন করুন কাহিনীর মত, কিন্তু ধ্রুব সত্য।আমি নিজেই তার প্রত্যক্ষ সাক্ষী।ভাইটার কর্ম জীবন পাকিস্তান দিয়ে শুরু হলেও অনেক দেশ গুরেফিরে ইরান তুরান সিরিয়া লেভানন হয়ে বর্তমানে তিনি সেন্টার ইউরোপের একটি দেশে স্হায়ি অভিবাসি বা প্রবাসি।এই ইউরোপে পোঁছার জন্য তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।জীবন বাজি রেখে কখনও ডাংকি মেরে পাঁয়ে হেঁটে বাই বাসে বাই ট্রেনে বাই প্লেনে বাই বোর্টে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে ইউরোপে আসতে হয়েছে।বেশ কয়বার তাকে দাঁড়াতে হয়েছে মৃর্ত্যুর মুখোমুখি।তিনি অনেক ভাগ্যবান জীবনের এক দীর্ঘ জার্নিতে তিনি মোটামুটি সফল হয়েছেনিএই পথে অনেকেই প্রান হারিয়েছে।সমুদ্রে ডুবে কিংবা সিমান্ত রক্ষীর গুলিতে।
তার বায়োগ্রাপি বা জীবনী লিখতে হলে বিশাল একটা বই হয়ে যাবে।আমি সেদিকে যাচ্ছিনা।কারণ আমার লেখার বিষয় বস্তু হলো মেয়েগুলি এত বোকা হয় কি করে--?
আমার সেই ভাইটা মেট্রিক পর্যন্ত দেশে লেখাপড়া করে দেশেই হাল গৃহস্হি করতেন।প্রচন্ড কর্মট ছিল মানুষটি।মা-বাবা ছেলেটা বখাটে বা বাজে পথে চলে যাবে বলে অল্প বয়সেই বিয়ের সিঁড়িতে বসিয়ে দেন।বউ এক বাপের এক মেয়ে। স্বশুর বাড়ির আগে নাম ডাক থাকলেও এখন ঠোল ঠোল। কিছু নেই।বাড়ির বেশির ভাগ পুরুষরাই মুর্খ ও বেকার, কেউ মদ খোর কেউ জুয়া খোর।ঠাটবাঠ আর বড় বড় কথা আছে। আর কিছু নেই।এই ভাইটা বিয়ে করে পড়ছিলেন মহা বিপদে।পর পর দুটা মেয়ের বাপ হয়ে গেলেন। মেয়েগুলিও দেখতে মোমের পুতুলের মত সুন্দর।গুনি জনে যে বলেন সুন্দুরি মেয়েরাই হয় বোকা। বোধ হয় তাই।
আমার সেই ভাইটা বিয়ের পরে ত্রিমুখি যন্ত্রনায় পড়ে গেলেন।স্বশুর স্বাশুড়ি পক্ষরা বলে শিক্ষিত জামাই দেখে মেয়ে বিয়ে দিয়েছি জামাই দেখি এখন হাল চাষ করে।মা-বাবা মনে করে ছেলে সংসারের আয় উপার্জন সব বউ এবং স্বশুর বাড়ি তুলছে।সাত আট ক্লাশ পড়ুয়া বউ বিলাশি পুডাঙ্গি করতে পারছেনা।নিত্য একি কথা তেল সাবান না কিনে দিতে পারলে বিয়ে করছ কেন--?
ত্রিমুখি যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে সেই ভাইটা বাইরোডে পাকিস্তান এসে পোঁছে।আসার সময় সাত দিন সাত রাত তাকে পাঁয়ে হাঁটতে হয়েছে।সাঁতার না জানা মানুষটা কিভাবে যে সিন্ধু নদী পার হয়েছেন তা তো রিতিমত এক বিশ্ময় ও অলৌকিক ঘটনা।
যাক পাকিস্তানের করাচি শহরে এসে তিনি কাজকর্ম করে দুজন মাঝুর ভিক্ষুকের জমানো টাকা দিয়ে সিরিয়া গিয়ে পোঁছেন।সিরিয়া লেভাননে কয় বছর থেকে তিনি ইউরোপে এসে সেটেল হয়ে পারমেনেন্ট রেসিডেন্সিয়াল পারমিট পেয়ে বেশ টাকা পয়সা কামায়ে দেশে যান।দেশে গিয়ে তিনি টাকার গরমে এবং দু:চরিত্রা স্ত্রিকে নিয়ে স্ত্রির কথায় তিনি আলাদা একটা পাকা বাড়ি কিনে মাবাবার পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যান।একতলা বাড়ি কিনে সেটাকে দোতলা করে দুটা কেশোরি মেয়ে ও জোয়ান বউকে এবং স্বশুর স্বাশুড়িকে রাস্তার পাশে নতুন বাসায় রেখে চলে আসেন।নীচের তলায় তারা থাকেন উপরের তলায় থাকেন ভাঁড়াটিয়া থানার দারোগা সাহেব।
খবরটা আমি প্রথম শুনেই ঐ ভাইটাকে বলেছিলাম কাজটা আপনি ঠিক করেননি।এভাবে রাস্তার পাশে মেয়েদেরকে একেলা রেখে আসা ঠিক হয়নি।থানার দারোগাকেও বাসাটা ভাঁড়া দেওয়া আপনার উচিত হয়নি।ভাইটি আমার কথা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন।
আমার কথা গুলির হাতেনাতে প্রমান পেল দুবছর পরে আমার সে ভাইটা যখন পুনরায় দেশে গেল।দেশে গিয়ে একদিন তার বড় মেয়েটাকে বললো মা মনি আব্বুর মাথায় ব্যথা করছে এক কাপ চা বানিয়ে দে।পনর বছরের মেয়েটা বললো, জ্বি আব্বু আপনি বসুন আমি এক্ষুনি বানিয়ে দিচ্ছি। বাবা চা এর প্রতিক্ষায় বসে রহিল, আর মেয়েটা বাবার বিদেশ থেকে নেওয়া ছয় লক্ষা টাকা নিয়ে উদাউ।চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েটাকে কোথাও মিলছেনা। কি হলো মেয়েটা গেল কই।এতগুলি টাকা! হাঁড় ভাঙা পরিশ্রমের টাকা।ছ-মিলে কাজ করে এই টাকাগুলি রোজকার করছেন।বাবা প্রায় পাগল বারবার বেঁহুষ হয় মুর্চা যায়।কি করবে ভেবেই কুল পাচ্ছেনা।
সাতদিন পরে মেয়ের খোঁজ মিললো বাঁন্দর বনের পাহাড়ি অঞ্চলে খাগড়াচড়ির একটি বাড়িতে।মেয়েটা এক রিপোজি পরিবারে বাবার চুরি করা টাকাদিয়ে রঙিন টিবি প্রিজ খাটপালঙ্গ কিনে দিব্বী আরামছে সংসার করছে।ছেলেটা আর কেউ নয় মেয়েদের বসার ভাঁড়াটিয়া দারোগার বাসায় থাকা কাজের পোলা।বলা বাহুল্য ইতিমধ্যে মেয়েটি কয়েক মাসের প্রেগনেটও।মেয়ের মা নাকি সব কিছু আগে থেকেই জানতেন।
অসহায় ভাইটা আর কি করবে।সবার অনুরোধে অবশেষে মেয়ের এই অনৈতিক সম্পর্কটা মেনে নিয়ে ছেলেটাকেও নিজের ছেলে হিসেবে বরন করে নিল।ছেলেটা দেখতে শূনতে যতটা সুন্দর তার চেয়ে শতগুন বেশি কুতসিত ছেলেটার চরিত্র।আমি প্রথম দেখেই অপছন্দ করলাম ছেলেটাকে।ঔ ভাইটাকেও বারবার সাবধান করেছিলাম।ভাইটি আমার কথাতো শূনেইনি।বরঞ্চ আমাকে করা হলো সবার চোখে খারাপ।কারণ সমাজের সবাই ছেলেটাকে ভালো চোখে দেখে।ছেলের আচার আচরন ভালো। সব কিছু ঠিক আছেিইত্যাদি ইত্যাদি।
আমার সেই ভাইটা মেয়ের কারণে অচেনা একটা দুষ্ট চরিত্রের ছেলেকে তার সংসার দেখাশূনার দায়িত্ব দিয়ে দিল।প্রথমে একটা মঠর সাইকেল কিনে দিল ছেলেটিকে।ছেলেটি তার প্রতিদান দিল এই ভাবে সে আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করে ভাইয়ের অর্থাত স্বশুরের বাসায় এনে নতুন বউকে তুললো।ভেবে দেখুন হর খাউয়া ছেলেটার সাহস কতো বড়?
তার পরও ভাইটা আবার কি করলো, ব্যাংক থেকে ২৫লাখটাকা ঋন নিয়ে মাইজদী শহরে ছেলেটাকে একটি ইলেক্ট্রিকের দোকানের পুঁজি দিয়ে বসায়ে দিল। দুটা ছোট পিকাব ভ্যান কিনে দিল।আমার সেই ভাইটা বললাম এইটা আপনার মোটেই উচিত হয়নি।কেন আপনি এই কাজটি করলেন?সে বললো আমি তোমার চেয়ে বেশি বুঝি।দেশে আমার আর কোন খরচ পাঠাতে হবেনা।তারা ইনকাম করে চলতে পারবে।
পরে আমি দেশে গিয়ে ছেলেটার হালচাল দেখে এসে সেই ভাইটাকে আবার সাবধান করলাম।আবারও আমি সবার নজরে খারাপ হলাম।এমনকি ছেলে এবং ঐ মেয়েটির চোখেও।
তারপর ঘটালো অন্য ঘটনা, মাত্র আড়াই তিন বছরের মাথায় ছেলেটা ইলেক্ট্রীব ব্যবসা পিকাবের ব্যাবসা সব গাছে তুললো।পিকাব দুটি নষ্ট পড়ে আছে পুঁজি সম্পুর্ন মার।তার উপর ভাইটার ছোট মেয়ের বিয়ের ব্যপারে লোকজন দেখতে আসবে। সেই উদ্দেশ্যে পাড়া পড়শিদের কাছ থেকে গয়না পাতি দ্বার করে বাসার এবং আগত আত্মিয় সজন সব মহিলারা পড়লেন।একটু বড়লোকি সেজে দেখালেন আর কি।আগত অতিথিরা যাবার পরে সেই রাতে ঘরের জানালার গ্রিল কেটে বাসায় ডাকাতি হয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার মালামাল ডাকাতরা নিয়ে গেল।পরে পুলিশ ইভেস্টিগেসনে উঠে আসে মেয়ের জামাই সেই ছেলেটা এই ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত।
আমার সেই ভাইটা শোকে মুহমান হয়ে অবুঝ শিশুর মত ঠুকরে ঠুকরে কেঁদেছে।আমি তাকে অনেক রকমের সান্তনা দিয়েছিলাম।কি আর করার ছিল আমার?
ঘটনার এখানেই শেষ নয়।ঐ দু:চরিত্রের ছেলেটা পরে আরো কিছু টাকা মেরে এখন সাউথ আফ্রিকায় উঠেছে। সেখানেও সে আফ্রিকান কালো মেয়ে বিয়ে করে আত্মিয় স্বজনের সামনে দিয়ে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে গুরাফেরা করে।ঐদিকে তার এক ছেলে এক মেয়ে।মেয়েটাকে দেখছি গান শিখছে সুন্দর গান করে, ইতিমধ্যে মেয়েটাও নাকি লাভ মেরিজ করে অন্যত্র সংসার পাতছে।
আর আমার ঐ ভাইটার মেয়ে এখন নাকি নিংসঙ্ঘ হলেও একাই একশ। কেউ বলে তিন থানার ওসি।অবশ্য পরে ঐ ভাইটার দু টা ছেলে হয়েছে। তাই সে হয়তো অনেক কিছুই ভূলে গেছেন। কিন্তু আমি একজন খেয়ালি মানুষ হিসেবে ভূলি কেমন করে?
২,মেয়েরা এত বোকা হয় কি করে--?
দ্বিতীয় গটনা:ঠিক একই ভাবে আরেকজন প্রবাসি ভাই দেশে নিজের খেয়াল খুশিমত বিয়ে করে বউকে প্রেগনেট রেখে অনেক কাঠখড় পোড়ায়ে অবশেষে অনেক বছর পরে ইউরোপে এসে সেটেল হলেন। স্হায়িভাবে রেসিডেন্সিয়াল পারমিট পেয়ে দেশে গেলেন।দেশে গিয়ে তিনি দেখেন গর্ভে রেখে আসা সন্তানের বয়স তখন এগার কি বার বছর।আমার সেই ভাইটা প্রচন্ড ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন।মেয়েটি ছিল তার ভালোবাসার ফসল।অবশ্য এই মেয়ের আগেও তার একটি ছেলে হয়েছিল।কিন্তু দুর্ভাগ্য বসত ছেলেটি জন্মের পরই মারা যায়।নিজের স্ত্রি সন্তানের করুন মুখ দেখে সেই ভাইটি বিদগ্ধ হৃদয়ে একটুখানি শান্তির আবাস খুঁজে পেয়েছিলেন।নতুন করে জীবনটাকে গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল।কিন্তু আমার সেই প্রবাসি ভাইটার স্বপ্ন অচিরেই ভঙ্গ হলো।
বলা বাহুল্য প্রথম মেয়েটির চাচাতো বোন এই মেয়েটি।বড়বোন মাত্র পনর বছর বয়সে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে।আর ছোট বোন মাত্র তের বছর বয়সে।সবে মাত্র অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে।
প্রবাসি পিতার ধন সম্পদের প্রতি আত্মিয় অনাত্মিয় অনেকেরই লোলুপ দৃষ্টি আগ থেকেই পড়ে আছে।সবাই চায় তার একমাত্র মেয়েকে নিজের ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে সম্পত্তির মালিক হয়ে ভাগ বাটোয়ারা করে ভোগ করবে।অনেকে মুখের উপরই বলতে লাগলো তুমি ধন সম্পদ দিয়ে কি করবে? নিজের ছেলে সন্তান নেই।আমার ছেলের সাথে তোমার মেয়ে বিয়ে দিয়ে দাও,আমার ছেলে দেখাশূনা করবে তোমার সম্পত্তি।দুএকজন ভাগিনা তো ধরেই নিয়েছে মামা একমাত্র মেয়েকে তার সাথেই বিয়ে দিবে। আমার সেই ভাইটি কারো মুখে সরাসরি থু না মারলেও সবাইর মুখে মনে মনে পেশাব করে দিয়েছিল।
প্রবাসি ভাইটি একমাত্র মেয়ের সুখ সুবিধার জন্য দু ইউনিটের পাকা বাড়ি করে মা-ও মেয়েকে বাসায় রেখে আসে।সাথে রেখে আসে মেয়ের বড় মামা ও অবসর প্রাপ্ত নানাকে।কযদিন যেতে না যেতে নানা একমাত্র নাতনী ও মেয়েকে চেড়ে চলে গেলেন এই অঝুহাতে যে জামাইর বাসায় স্বশুর থাকলে মানুষ খারাপ বলবে।তারও কিছু দিন পরে গাঁজাখোর মামাও তার বোনকে মেরে চলে গেলেন, এই অঝুহাত তুলে যে এখানে থাকলে তার লাইপ বরবাদ হয়ে যাবে।
No comments:
Post a Comment