বাংলাদেশে বাদাম্মার রাজনীতি এবং প্লেটোর দ্যা রিপাব্লিক।
মহামতি সক্রেটিস |
১, আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে দার্শণিক মহামতি সক্রেটিসের প্রধান শিষ্য প্লেটো দ্যা রিপাব্লিক বা গনরাজ্য নামে একটি বই লিখেছেন।বলা বাহুল্য প্লেটো অনেক গুলি বই রচনা করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো দুটি বই। একটি হলো দ্যা রিপাব্লিক, অন্যটি হলো ল,স, ইংরেজিতে যাকে বলে Low,s. ল,স বইটিই তার শেষ লেখা।এই বই দুটির ব্যপারে প্লেটোর একটা কনপিডেন্স ছিল।তিনি বলেছিলেন আমার বই দুটি সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য বা সর্বাধুণিক হবে।যার নতুনত্ব কখনো পুরিয়ে যাবেনা।আসলে হয়েছেও তাই। আড়াই হাজার বছর আগের লেখা বই, এই যেন কালকের লেখা।
বাংলাদেশের বাদাইম্মা রাজনীতিবীদদের বইটা পড়ে দেখা উচিত।বাদাইম্মা রজনীতিবীদ আমি বলছি তাদেরকে,যাদের রাজনীতি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র কোন অভিজ্ঞতা নাই।খামাকা রাজনীতি নিয়ে হাম্বিতুম্বি বা বকোয়াজ করিতেছে।
বকোয়াজের কোন শেষ নাই।সামনে আসছে জাতীয় নির্বাচন।নির্বাচনকে গিরেই বকোয়াজ চলছে।জোট মহাজোট গড়ে ক্ষমতায় যেতে সবাই ব্যতিব্যস্ত।কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে এইসব বাদাইম্মা ভাঁড়রা আসলে করবে টা কি? তার কোন কনসেপ্ট নেই প্রতিশ্রুতি নেই।
জোট বাঁধার মহা ধুম---
মহামতি প্লাটো |
খেলাটা জমে উঠেছে দেখার বিষয়।আমার বিশ্বাস যদি দৈবক্রমে শুধু আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি মিলে একটি জোট গঠন করে।তাহলে বাঁকি দলগুলিকে দুর্বীন দিয়েও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো বিএনপি এখনো একটি সঠিক রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি।বিএনপি এখনো একটি রাজনৈতিক প্লাটফরমই রয়ে গেল।সুতরাং আওয়ামী লীগের সাথে সংলাম এবং সমযোতা কোনদিনই সম্ভোব নয়।
বাদাইম্মাদের কমেডি আপাতত চলছে চলুক,ভালো লাগার মানুষ গুলির কাছে তো ভালোই লাগছে, আমার কি যায় আসে। পরলে তো বলতাম হেই চুদির পুতেরা দেশ ছাড়।
দ্যা রিপাব্লিক বইটিতে গুরু সক্রেটিসের কথোপকথন বা তার বক্তৃতা বিবৃতি গুলিই শিষ্য প্লাটো তুলে ধরেছেন।সক্রেটিস ছিলেন স্বল্প শিক্ষিত অসাধরণ একজন মানুষ।কিন্তু তিনি ছিলেন প্রখর প্রজ্ঞাবান জ্ঞানি মানুষ।প্রাচীন গ্রীসে অসংখ্য দার্শণিকের জন্ম হয়েছে বটে, তবে দার্শণিকের শিরমণি বলা হয় একমাত্র সক্রেটিসকে।অবাক করার মত ব্যপার হলো যে সক্রেটিস নিজে তার কোন কথা বা মতবাদ লিখে প্রকাশই করে গেলেন না।তবু দু-আড়াই বছর ধরে সে সক্রেটিসের এত প্রভাব কেন গোটা বিশ্বে?আজো দর্শণ স্বাস্ত্রে তাকে কেন পড়ানো হয়। সক্রেটিসের শিষ্য প্লেটো এবং প্লেটোর শিষ্য এরিস্টটল,এই তিনজনই দর্শণের তিন মহারতি।গুরু থেকে শিষ্যের প্রভাব বেশি হলেও কেহই গুরু কে অতিক্রম করে যেতে পারেনি।অন্তত খ্যাতির ব্যপারে।
সক্রেটিস নিজে লেখাপড়া জানতেন কম, কিন্তু তিনি জিবীকা নির্বাহ করতেন জ্ঞান দান বা শিক্ষা দান করেই। তার মুখের কথা শুনার জন্য বড় বড় শিক্ষিত লোকেরা লাইন ধরে বসে থাকতো।এমনকি শিক্ষিত ধনি লোকেরা তাকে দাওয়াত করে নিয়ে যেত নিজ নিজ প্রসাদে।প্রশ্নবানে তাকে জর্জরিত করতো এবং সমাধান চাইত।সক্রেটিস যুক্তি সহকারে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর এবং যুতসই সমাধান দিতেন।এতে কেউ সন্তুষ্ট হলেও কেই আবার সন্তুষ্ট হতে পারতেন না।দ্বন্ধে জড়িয়ে যেতেন।মুলতঃ সক্রেটিস ছিলেন দ্বান্দিক মতবাদে বিশ্বসি।
মহামতি এরিস্টেটল |
দ্যা রিপাব্লিক বইটিতে গুরু সক্রেটিসের বক্তৃতা বিবৃতি ও ডাইলগ গুলিকেই তুলে ধরেছেন।তারা একটি কল্পিত রাজ্য বা রাষ্টের রুপ রেখা নিপুনভাবে অঙ্কিত করেছেন।যা হবে একটি সর্বাধুণিক ন্যায় রাষ্ট্র বা ন্যায় রাজ্য।একটা ন্যায় রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট কি হবে।রাষ্ট্র প্রধান মন্ত্রিবর্গ কেমন হবে।বিদেশনীতি ব্যবসা বানিজ্য থেকে ধর্মনীতি কেমন হবে সবকিছুরই বিষদ বর্ণনা আছে।ন্যায় ও অন্যায় এর ব্যাখ্যা নিয়েই বইটি সামনের দিকে এগুতে থাকে।
বইটির বিষদ বর্ণনার দিকে না যেয়ে আমি শুধু মুল কথাটিই বলছি।কল্পনার ন্যায় রাষ্ট্রের ব্যাপারে তারা বলেছেন, একটি আধুনিক ন্যায় রাষ্ট্রে জনগনের প্রতিটি মৌলিক চাহিদা পুরন করতে সরকার বাদ্য থাকিবে।রাষ্ট্র প্রধান এবং তার মন্ত্রিবর্গেরা হতে হবে দার্শণিকের মত জ্ঞানি।তাদেরকে থাকতে হবে দিগম্বর।তাদের মধ্যে আমার তোমার বলে কোন কিছু থাকবেনা।তারা জনগকে পরিচালনা করবে, আর জানগন তাদের ভরন পোষন সব কিছু বহন করবে।ইত্যাদি--
আমি আগেই বলেছি সক্রেটিস ছিলেন দ্বন্ধবাদী মানুষ। এই দ্বন্ধবাদের কারণে তার বিচার হয়েছিল।৫০০শত বিচারপতি তার বিচার করে সর্বোচ্চ রায় প্রধান করলেন ৩০০ বনাম ২০০ বিচারপতি তাকে দিলেন মৃর্ত্যুদন্ড।মানব জাতির ইতিহাসে এত বেশি বিচারপতি আর কোন বিচার কার্য নিয়োগ করা হয়নি।অবশ্য বিজ্ঞ বিচারপতিরা দুটা অফসন রেখেছিল তার সামনে। হয় দেশ ছাড়. নতুবা বিষপান করে আত্ম হত্যা করো। সক্রেটিস আত্মহত্যাকেই শ্রেয় মনে করে হেমলক গাছের বিষাক্ত রস পান করে প্রকাশ্যে হাসতে হাসতে আত্মহত্যা করলেন।অবাক বিশ্ময়ে চেয়ে রইলো তৎকালীন সরকার ও সভ্যসমাজ।তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে সে নাকি গ্রীসের দেব দেবিকে অবজ্ঞা এবং যুবসমাজকে বিগড়ানোর।
২,মহানবী হযরম মুহাম্মদ (সাঃ) এর ওফাত বা ইন্তেকালের অল্প কয় বছরের মাথায় খালিাফা ওসমান গনির হত্যার মধ্যদিয়েই সুচনা হয় উমাইয়া খালিফাত্বের।যদিও এরিমধ্যে স্বল্প সময়ের জন্য আলী রাঃ ও তার জৈষ্ট সন্তান ঈমাম হাসান রাঃ খালিফার দায়িত্ব পান।মুআবিয়ার খালিফাত্ব কালে ইসলাম অনেকটা সুসংগঠিত শক্তিশালি ও প্রসারিত হলেও ভোগবাদিত্বের দিকে দাবিত হতে থাকে।উমইয়ারা নব্য মুসলিমদেরকে ভাবত মাওয়ালী তথা দ্বিতীয় শ্রেণীর মুসলমান।দাসরা হলো তৃতীয় শ্রেণীর।এইভাবে তারা এক মুসলমানকে বারটি জাতে ভিবক্ত করেন। এই বর্ণবৈশম্যের কারণে উমাইয়ারা খালিফাত্ব হারান এবং এক ক্রান্তিকালে পড়ে যায় ইসলাম ধর্মটাও। তারপরও উমাইয়াদের যুগকে বলা হয় আরব যুগ।
ইসলামি ইতিহাস পর্যলোচনা করলে দেখা যায় হানবী হযরত মুহাম্ম (সাঃ) এর ইন্তেকালের পর থেকে আজ পর্যন্ত গোটা আরব মুল্লুকে আর কোন বুজর্গ কিংবা দার্শণিকের জন্ম হয়নি।তবে হ্যাঁ অসংখ্য সাহাবীর জন্ম হয়েছে।যারা বেশির ভাগই ধর্মান্তরিত সাহাবি।আরব জাতি যে মূর্খ বেদুইন বর্বর জালিম জাতি ছিল, ঠিক আজো তাই রয়ে গেছে।ভোগ বিলাশ আর প্রভূত্বগিরিতে তারা আজো উন্মাদ এবং মসগুল। প্রাচীন গ্রীক দার্শণিকদের যুগের শত শত বছর পর ফার্সি ভাষাবাসি ইরানে জন্ম নিলেন অসংখ্য কবি সাহিত্যিক এবং দার্শণিক। হাফিজ সাদি ফেরদুসি ঈমাম আবু হানিফা,রুমি বায়েজিদ বোস্তামী, ওমর খৈয়াম,ইবনে সিনহা মোল্লা নাসির উদ্দিন হোজ্জা সামস তিবরিজ, আল ফারাবি, ফরিদ উদ্দিন আত্তার, নিজামী, আল গাজ্জালি আল মনসুর সহ অগনিত দার্শণিক।এমন কি ঈমাম বোকারি সাহেব বোকারাতে জন্ম হলেও তিনি ছিলেন পারসিক ভাষি।এই সব পারসিক মহরতিরা আব্বাসিয় খালিফাত্ব কায়েম করতে সর্বাত্বক সহযোগিতা করে।এমনকি প্রায় সাড়ে সাতশত বছর এই পারসিক পন্ডিতরাই ছিল আব্বাসিয় খালিফাদের ন্যায়পাল দিকপাল উপদেষ্টা সেক্রেটারি এমন কি মন্ত্রিবর্গও।পারসিক পন্ডিতের যুগকে বলে ইসলামের সোনালী যুগ, আর আব্বাসিয় খালিফাদের যুগকে বলা হয় ইসলামি যুগ।
আব্বাসিয় খালিফাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যিনি ইসলামি শিক্ষা সংস্কৃতির প্রসার ঘটান তার নাম হলো খালিফা আল মামুন।তার মা এবং স্ত্রি ছিলেন ফার্সি ভাষি।তৎকালিন ফার্সি এই সব রতি মহারতিরা রিতিমতগ্রিীক দার্শণিকদের মতাদর্শকে খন্ডন করে ইসলামি মতাদর্শের প্রতি সমগ্র মানবজাতিকে অনুপ্রানিত করে।ইরানের কবি হাফিজের যেমনি কনফিডেন্স ছিল তার কবিতা বা সৃষ্টি কর্মের প্রতি, তেমনি আবুল কাশেম ফেরদুসিরও শাহানামার প্রতি।শেখ শাদির ও আত্মবিশ্বাস ছিল তার রচনাবলির প্রতি।দুরুদ সরিফ এয়া হাবে সালামালইকা, ইয়ানাবি সালামালাইকা তো শাদিরই রচনা।এক একটি যেন হীরের টুকরা।এরা সবাই নিজ ক্ষেত্র থেকে যেমন ইসলামকে সম্বৃদ্ধ করেছিল, তেমনি জ্ঞান বিজ্ঞানকও সাহিত্যকেও সমান ভাবে সম্বৃদ্ধ করেছিল।এদের এক একজন আজকের দিনের নোবেল লরিয়েটদের চেয়েও অধিক জ্ঞানি ছিলেন।তারা প্রত্যেকে আজকের দিনে হলে নোবেল পাওয়ার যোগ্য ছিল।
এদের মধ্যে ইবনে সিনা মেডেসিনে অগ্রনি ভূমিকা রাখলেও তিনিও দেড়শটির মত পুস্তোক রচনা করেছিলেন।আর আল মনসুর, আমরা যাকে মনসুর হাল্লাজি বলে চিনি।তিনিও ছিলেন সক্রেটিসের মত মহা দার্শণিক ও কবি।সক্রেটিসের চেয়েও জগন্য এবং করুন ভিবৎস মৃর্ত্যু আল মনসুরকে বরন করতে হয়েছিল।ফরেজগার বার বার হজ্ব করা আল্লাহর প্রেমে দিওয়ানা এই কবি কবিতায় উচ্চারন করেছিলেন আইনাল হাক্ক।আইনাল হাক্ক আল্লাহর নিরানব্বই নামের একটি। সিদা কথাকে উল্টো করে বলাই কবিদের স্বভাব।যারা বুঝে তারা হয় খুশি আর যারা বুঝেনা তারা হয় বেজার।আল মনসুরের বেরায়ও হয়েছে তাই তাকে আব্বাসিয় খলিফা মুকতাদির নির্দেশে প্রকাশ্যে হত্যা করেছিল বাগদাদের ময়দানে।সূফি মতাদর্শের প্রবক্তা আল মনুসুরকে টুকরো টুকরো করে উল্রাস করে হত্যা করেছিল তৎকালিন মুমিন মুসলমানেরা।প্রথমে তার দুপাঁ কেটেছিল, তখনও তিনি বলেছিনে আমিই পরম স্বত্বা, যখন হাত কেটেছিলেন তখনও তিনি বলেছিনে আমিই পরম সত্য।রক্তদিয়ে তিনি ওজু করে বলেছিলেন আমিই প্রেম।জনৈক ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করেছিল প্রেম কি? তিনি বলেছিলেন আমার মৃর্ত্যুর পরে দেখতে পাবে প্রেম জিনিসটা কি।মুসলমানরা তার দাঁত গুলি একটি একটি করে ভাঙলো। তারপর জিব্বা টেনে কাটলো, তারপর মাথা কেটে টুকরো গুলি জড়ো করে আগুন দিয়ে পুড়ে ফেললো।তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হলো সে খ্রিষ্টানদের অনুচর।সে নিজকে খোদার সাথে তুলনা করেছিল।
আমাদের দেশের মাওলানা মৌলুবিরা আবু হানিফাকে নির্যাতন করে জেলখানায় হত্যা করেছে বলে কান্নাকাটি করে।আমাদের দেশের পন্ডিতরা সক্রেটিসের কথা বলে অশ্রুশিক্ত করে। কিন্তু মনসুর হাল্লাজির কথা কেউ মুখে উচ্চারন করতে ভয় পায়, রহস্য জনক ভাবে সবাই এড়িয়ে যায়।
৩, দার্শণিক এরিস্টেটল বলেছিলেন----
যাদের অসংখ্য বন্ধু আছে, আসলে তাদের কোন প্রকৃত বন্ধু নাই।
মহামতি এরিস্টেটলের এই দৈব বাণীটি ধ্রুব সত্য হিসেবে প্রমানিত হলো জাতরি জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের বেলায়।বাঙ্গালী জাতি গর্ব
করে তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দিয়েছিল।জাতির জনক আবেগে আফ্লুত হয়ে একধাপ বাড়িয়ে বলেছিল তোমরা আমার ভাই।বন্ধুর চেয়ে অবশ্যই অনেক উপরে স্হান হলো ভাইয়ের।সেই বর্ণচোরা বাঙ্গালী ভাই বন্ধুরাই নিশংসভাবে স্বপরিবারে হত্যা করলো সর্বকালের সর্বসেরা বাঙ্গালী জাতির জনককে।বাঙ্গালীর নিজেই নেজেকে প্রমান করলো তারা যে মির জাফরের বংশধর, তারা যে গাদ্দার মাক্কার কলঙ্কিত জাতি।বিজয় হলো বঙ্গবন্ধুরই।তিনি হলেন মহত ও মহান। মহামানবরা কখনও হত্যা হন না। একতা কুখ্যাত খুনিরা জানতো না।মহামানবরা বেঁচে থাকেন তাদের সৃজন শীলতায়,দিকদর্শণে লাখো কুঠি ভক্ত অনুরাগির আত্মায় প্রেম ভালোবাসায়।বঙ্গবন্ধু আজো আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন এবং অনন্ত কাল ধরে বেঁচে থাকবেন।
বাদাইম্মা রাজনীতির উত্থান পর্ব---
স্বঘোষিত স্বৈরচার আইয়ূব খানের বেসিক ডেমোক্রেসি বা মৌলিক গনতন্ত্র,স্বৈরচার জিয়ার বহুদলীয় গনতন্ত্র বনাম পতিত স্বৈরচার এরশাদের অদ্ভূদ গনতন্ত্র।
যুক্তফ্রন্টের পার্লামেন্টের ভিতরে একটি মারামারিকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার অজুহাত তুলে জেনারেল আইয়ূব খান রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে মার্শাল,ল জারি করে তিনি সর্বেসর্বা হয়ে বসলেন।ক্ষমতায় বসে তিনি নানা চলচাতুরির আশ্রয় নিলেন।প্রথমে তিনি একটি বই লিখলেন, প্রভূ নয় বন্ধু, নামে।তারপর তিনি বেসিক গনতন্ত্র জারি করে সারা বিশ্বে হাস্যের পাত্র হলেন।বিশ্ববাসি জানতে চাইল বেসিক গনতন্ত্র আবার কোন ধরনের গনতন্ত্র?তিনি ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে,গনতান্ত্রিক নিয়মে ভোটাভুটি সবকিছুই ঠিকঠাকমত হবে, কিন্তু ক্ষমতায় থাকবো আমরাই।তিনি একদিকে উন্নতির নামে পুঁষে উঠা বাঙ্গালীকে সান্তনা দিতে লাগলেন, আরেকদিকে তার বইতে বাঙ্গালীকে লেঙ্গুয়েজ ওয়েফনের হুমকি দিলেন। তিনি তার বইতে প্রকাশ করলেন বাঙ্গালীরা হিন্দু কতৃক প্রবাবিত পিছিয়ে পড় অনগ্রসর একটি জাতি।এই জাতিকে ইসলামি আদর্শের মাধ্যমেই পাকিস্তানিদের সমপর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভোব।তিনি বাংলা উর্দু ভাষাকে মিলিয়ে চায়না ভাষার মত একটি অদ্ভূদ ভাষা সৃষ্টিরও উদ্দেগ নিলেন।যার নাম হবে সম্ভোবত বাংউর্দু। বাংউর্দু এই ভাষাটির লেখা শুরু হবে চিনা ভাষার মত উপর থেকে নীচের দিকে। বাম দিক থেকেও লেখা যাবেনা ডান দিক থেকেও ন।অবাক করার বিষয় হলো যে আইয়ূব খানকে এ ব্যপারে সহযোগিতা করেছিল কবি ফররুখ আহম্মেদ কবি গোলাম মোস্তফা ও সাহিত্যিক সৈয়দ আহসান হাবিবের মত বর্ণচোরা কিছু বাঙ্গালীরা। এই স্বৈরচারই প্রথম অখন্ড পাকিস্তানের রাজনীতিতে বাদাইম্মাদের উত্থান ঘটান। এই স্বৈরচার পরে প্রচুর গনচাপের মুখেই ক্ষমতা চাড়তে বাদ্য হলেন।
স্বৈরচার জিয়ার উত্থান ও বহুদলীয় গনতন্ত্রের নামে অগনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্হা---
স্বৈরচার আইয়ূব খানের ভাবশিষ্য ও অনুসারি স্বাধীন বাংলাদেশের সেনা বাহিনীতে ঘাপটি মেরে থাকা খর্বাকার জিয়া একাত্তরের গাদ্দার আর মাক্কারদের সহযোগিতায় পঁচাত্তরের ১৫ই আগষ্ট জাতির জনককে নিশংসভাবে হত্যা করার পর ৭ই নভেম্বরে এসে নিজস্ব মুখোশ উন্মেষ করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে সর্বেসর্বা হয়ে বসলেন।তিনি শধু গনেশ নয়,তিনি বাংলার আকাশে সদ্য উদিত সূর্যকেও ডুবিয়ে দিতে উদ্যত হলেন।তিনি বাংলার ইতিহাস লেখাতে শুরু করলেন উল্টোভাবে।স্বাধীনতার ইতিহাসের পাতা থেকে বাংলার ইতিহাসের মহানায়কের নাম নিসানা মুছে দিলেন।উনডেমনিটি নামে কালো আইন জারি করে খুনিদের বিচার পক্রিয়াকে বন্ধ করে দিলেন।রাজাকার আলবদরকে পুর্নবাতি করে চীপ রাজাকার সাহইজজকে প্রধান মন্ত্রি বানিয়ে প্রধান রাজাকার নেতা গোলাম আজমকে নাগরিক্ত ফিরিয়ে দিলেন। তিনি সংবিধানের চার মুলনীতিকে গুরিয়ে দিয়ে জুড়ে দিলেন বিছমিল্লাহ। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে বসে বাঙ্গালীর বাঙ্গালীত্বকে অর্থ্যাৎ বাঙ্গালী জাতীয়বাদকে বানিয়ে দিলেন বাংলাদেশি জাতীয়বাদ।জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলাকে পাল্টিয়ে প্রথম বাংলাদেশ শেষ বাংলাদেশ করার উদ্যেগ নিলেন।একাত্তরের পরাজিত শক্তিকে রাজনীতিতে শুধু পুর্নবাসন করেননি, রিতিমত মন্ত্রিমিনিষ্টার বানিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আদলে বাংলাস্তান বানাবার প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখলেন।এই স্বৈরচার শুধু পঙ্গু মুক্তি যোদ্ধা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরকে হত্যা করে খ্যান্ত হননি, জেলখানার অন্ধ প্রকোষ্টে নির্বিচারে হত্যা করেছেন হাজার হাজার সেনা বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে।তার পরে নিজ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য বাদাইম্মা আর আঁধুনিবাঁধুনির পোলাপাইনকে নিয়ে গঠন করলেন একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম।আখের শেষ রক্ষা হলো না শ্বশানের মাটি দিয়ে গড়া এই স্বৈরচারের। নিজ কার্যকলাপের কারণে নিঃশংস ভাবে খুন হলো এই স্বৈরচার। শুনেছি তার লাশও খুঁজে পায়নি। ব্রাসফায়ারে চিড়েবিড়ে গেছে এই স্বৈরচারের দেহের মাংশ।
পতিত স্বৈরচার এরশাদের অদ্ভূত গনতন্ত্র---
ভারতে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশে অভিবাসিত এই স্বৈরচার বন্দুকের নল ঠেকিয়ে নির্বাচিত সরকারকে হঠিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে আইয়ূব জিয়ার মতই মার্শাল,ল জারি করে নিজেই সর্বেসর্বা হয়ে বসলেন। ক্ষমতায় বসে এই স্বৈরচার জিয়ার অসামাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করার উদ্যেগ নিলেন।তিনি পাকিস্তানের আদলে বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবেও ঘোষনা দিলেন।এবার তিনি শুধু রাজাকরকে নয় বঙ্গবন্ধুর স্বঘোষিত খুনিদেরকেও পার্লামেন্টে নিয়ে আসলেন।রাজনৈতিক দল গঠন করার সুজোগ করে দিলেন।বিদেশে বাংলাদেশ দুতাবাসে চাকুরি দিলেন। ব্যবসা বানিজ্য করার সুজোগ করে দিলেন।১৯৮২ সালে এরশাদ ক্ষমতা দখল করে তিনি বাংলাদেশে প্রতিষ্টিত কয়জন কবির সহযোগিতায় ১৯৮৩ সালে -কনক প্রদীপ জ্বালো, নামে স্ত্রি রৌশনকে দিয়ে একটি কাব্যগ্রন্হও প্রকাশ করে পেলেনে।এই স্বৈরচার কুটকৌশল করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জিয়ার মতই পতিত বাদাইম্মা ও আঁধুনি বাঁধুনির পোলাপাইনকে নিয়ে একটি প্লাটফরম তৈরি করলেন।এই স্বৈরচার পাকিস্তানি স্বৈরচার জিয়াউল হকের কাছ থেকে খোদ পাকিস্তানি নিসানে খেতাবে ভূসিত হলেন।আর বাঙ্গালীদের কাছ থেকে বিশ্ব বেহায়া, বিশ্ব বেয়াদপ, বিশ্ব লম্পট, পতিত স্বৈরচার,সহ অসংখ্য উপাধি।নব্বইয়ের গনচাপে এই স্বৈরচার শুধু উৎখাত নয় জেলখানায় থাকতে হয়েছে ৬টি বছর।পৃথিবীর সমস্ত স্বৈরচারের নির্মম মৃর্ত্যু হলেও এই কুখ্যাত স্বৈরচার সুকৌশলে এখনও বেঁচে আছেন।
চলবে---