সম্পর্ক-টা এল কিভাবে-?
আমি সব সময় নিজেকে প্রশ্ন করি, মানব সমাজের মাঝে এই যে পারিবারিক বন্দন বন্ধু বান্ধব রিস্তা কিংবা সম্পর্ক,এই সম্পর্কটা এল কি ভাবে? কেন বা এল? আসলেই কি দরকার ছিল সম্পর্কের?এই যে মা-বাবা, ভাই-বোন সন্তান সন্ততি, বিংবা স্বামী-স্ত্রির মত নৈসর্ঘিক একটা সুন্দর সম্পর্ক।আমরা দেখতে পাই মানব সমাজে সম্পর্ক বা রিস্তা দু-রকমের হয়ে থাকে। একটা হলো রক্তের সম্পর্ক, আর অন্যটা হলো সম্প্রিতির মাধ্যমে। একে অপরকে দেখে শুনে ভালো লাগা থেকে ভালবাসা কিংবা প্রেম প্রিতীর মাধ্যমে সম্পর্ক হয়ে থাকে।মাঝে মধ্যে দেখা যায় রক্তের সম্পের্কের চেয়েও সম্প্রিতির সম্পর্কটা মহৎ হয়ে দাঁড়ায়।এমন কি সম্প্রিতির সম্পর্কের কাছে রক্তের সম্পর্ক তুচ্ছ প্রমাণিত হয়।অনেক সময় প্রচলিত আইনের উর্ধে উঠে আসে মানবিক সম্পর্ক।ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এমন একটি বিশ্মকর ঘঠনার রায় দিয়েছে।
যে ভাবেই হউক সম্পর্কটা এসেছে মানব সমাজের মঙ্গলের জন্যই এসেছে।প্রেমপ্রিতী ভালবাসা পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সন্মান করার এক অনন্য বহিপ্রকাশ হলো এই সম্পর্কটা।কিন্তু দুঃখের কথা হলো মানুষের এই সুন্দর সম্পর্কটা আজ আর অটুট নেই।এই সম্পর্কের সন্মান ধরে রাখতে মানুষ আজ চরম ভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মানুষের মাঝে আজ পরস্পরের প্রতি বিন্দু মাত্র সন্মান বোধ নেই।
যদি থাকতো আমাদের এই সমাজ ব্যবস্হাটা অন্যরকম হতো। প্রয়োজন হতো না গনতন্ত্রের সমাজ তন্ত্রের। প্রয়োজন হতো না আইন কানুন কোর্ট কাছারি পুলিশ থানা পাঁড়ির।মানব সমাজের মাঝে এই সম্পর্কের বৈশিষ্ট ভেঙে পড়ার কারণেই আজ সমাজের এই অবক্ষয়।এত খুন খারাবি ধর্ষন লুটের মত লোমহর্ষক ঘটনাবলি।
আজ টাঙ্গাইলের কালিহাতির মেয়ে রুপা হত্যার রায়ে চারজন ধর্ষককে আদালত সর্বচ্চ সাস্হি ফাঁসির দিয়েছে। ফাঁসি কার্যকর অবশ্যই হবে।একটা জগন্য অপরাধের জন্য এই সাজাই তাদের প্রাপ্য।কিন্তু একটা সভ্য সমাজের জন্য এটা মোটেই কাম্য নয়।একটা প্রাণের জন্য চারজনের প্রাণ আজ চলে যাবে।এই পৃথিবীতে মানুষ আসেই বা কয়জনের জন্য।কেন মানুষ এমন কুৎসিত জগন্য ঘটনা গুলি ঘটায়?
সেদিন কি ঘটেছিল--?
ল-কলেজে পড়ুয়া মেয়েটি ঢাকা থেকে ছোঁয়া নামক পরিবহনের একটি বাসে করে বাড়ি ফিরছিল।পরিবারের অসচ্ছলাতার কারণে মেয়েটি একটি বিপনি বিতানে চাকুরি করে নিজের পড়ার খরচ চালাচ্ছিল,পাশাপাশি নিজের পরিবারকেও সহযোগতিা করে আসছিল।এমন সাহসি মেয়ে অবশ্যই প্রসংসার যোগ্য।পিতৃহার মেয়েটি বাসবর্তি বাসে করেই নির্ভয়ে যাচ্ছিল।কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস কালিহাতি পোঁছানোর আগ পর্যন্ত একে একে সব যাত্রি নেমে গেল মেয়েটি একা বসে আছে পিছনের সিটে।মেয়েটিকে একা পেয়ে বাসের ড্রাইবার হেলফার কন্ট্রাকটর পাঁচজন পুরুষ মিলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে হত্যা করে জঙ্গলে লাশটি ফেলে চলে গেল। কি ভিবৎস একটি ঘটনা। পরদিন পুলিশ খবর পেয়ে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাপন করে ফেলল।পত্রিকায় ছাবি দেখে রুপা নামের মেয়েটির ভাই তার বোন বলে সনাক্ত করে থানায় মামলা করলো।তারপর গন দাবিতে আদালত এই রায় দিল।
ধর্ষণের আগে মেয়েটি লম্পটদেরকে নিজের কাছেছ থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও মোবাইল সেটটা দিয়ে বললো ভাই তোমরা এগুলি নিয়ে যাও, তবু তোমরা আমাকে অত্যাচার করোনা ভাই প্লিজ আমি খারাপ মেয়ে না। এই কুৎসিত লম্পটগুলি ভাই নামের রিস্তার দোহাইটার একটুও মর্যাদা রাখল না। ধিক্কার জানাই এই সব জানোয়ারদেরকে।
রুপা আমার আপনার মেয়ে, রুপা এই সমাজের এই রাষ্ট্রের মেয়ে। রুপাদের ইজ্জত এই সমাজ রাষ্ট্রর ইজ্জত।রুপার ইজ্জত আমার আপনার সকলের ইজ্জত। সবার কর্তব্য রুপাদের ইজ্জত ও জীবন রক্ষা করার।এই সমাজ থেকে দুর করতে হবে।