হে আমার প্রিয় স্বদেশ বাসি ।শুনো আজ আমার হৃদয়ে আগ্নি গিরীর অগ্নি লাভার মত জ্বলছে যে আগুন ।এই পৃথিবীর কোন ফায়ার বিগ্রেডে সে ধগ ধগে জলন্ত আগুন নিভাতে পারিতেছেনা।তোমরা সবে শুনো সে কাহিনী।এখনও জ্বলছে ধাউ ধাউ করে ।আমার প্রাণো প্রিয় জন্মভূমির এমন করুন অবস্হা দেখে ।শুনো সোনার বাংলার সোনা বন্ধুরা শুনো, সেই শৈশব থেকেই আমার বুকের মধ্যখানে গোলাপের পাঁপড়ির মত ছোট্ট হৃদয় টাতে ধা্উ ধাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে।আজো অবধি জ্বলিতেছে নিভিতেছেনা।জ্বলতে আছে শুধু জ্বলতে আছে পিয়তমা জননীর এমন দুরাবস্হা দেখে জ্বলতে আছে বুঝি ।
দুঃসহ যন্ত্রনায় আজ আমার হৃদয় ক্ষত বিক্ষত।আমি বন্দি প্রবাস নামের নির্মম কারাগারে।আজ আমার জীবন প্রদীপ নিভূ নিভূ।এরি মাঝে হারালাম কতো স্বজন পরিজন, বন্ধু বান্ধব, ভাই বোন বাবা।শেষ সম্বল বলতে আমার ছিল মাত্র একটি দুঃখিনী মা।কয় বছর আগে আমাকে এতিম করে আমার সে দুঃখিনী মা ও পাড়ি দিলেন আকাশের পথে।আমি বিমানের ককপিটে বসে বসে ইউরোআমেরিকা, আফ্রিকা থেকে এশিয়ার আকাশে বাতাসে অনেক খুজেছি আমার মাকে, কোথাও পেলাম না আমার সে রক্ত মাংশের মাকে।প্রবাসের নির্জন কুঠিরে বসে নিশীরাত অবধি কেঁধে কেঁধে আমি হই মাতাল নেশাখোরের মত চিন্নভিন্ন।কি ধারুন নেশাই না ছিল আমার সেই প্রান প্রিয় মায়ের বুকের দুধে। এমন যদি জানিতাম আগে, মায়ের বুকের দুধে এত নেশা লাগে, আরো বেশি খেয়ে নিতাম সে সুযোগে ।
পাশের রুমে আমার স্ত্রি কন্যা গুমে অচেতন আমি মাতাল, নেশার চোটে আমার রুমে বেঁহুষ হয়ে পড়ে রই।হঠাৎ একটি কোয়েল এসে গুন গুন করে আমার কানে কানে চির চেনা বাংলার সেই মেঠো সূরে একটি মেলডি শুনাতে থাকে।দুস্ট বালকের হাত থেকে প্রান বাঁচাবার জন্য খরগোস যেমনি দুকান খাড়া করে দুপাঁয়ে ভর করে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক দেখে, আমিও ঠিক তেমনি কান খাড়া করে সজাগ হই। মোটা মোটা জলে ভরা ঝাপসা ঝাপসা দু চোখে আমি দৃষ্টি দেই বাহিরে, দুরে অদুরে পানোরমায়।আমি দুনয়ন ভরে দেখি আমার রঙিন ঘর দুয়ার ইঁদিরা উঠান, ডোবা পুকুর,নোয়াবাড়ির আঙিনা পারিজাত সবুজ সতেজ গাছগাছালি,সবুজ ঘাঁস, সোনালি ধানের ক্ষ্যত,শৈশবের ইকিড়ি মিকিড়ি খেলার মাঠ।দেখি অসংখ ল্যাংটা শিশুর দল। দেখি নাঙ্গল কান্ধেঁ কয়জন কৃষক।দেখি খেয়া পাড়ে কয়জন মাঝি বসে আছে ক্ষ্যপের অপেক্ষায়।তার পর দেখি আমার শৈশবের সেই সাথি গুলি,রহিম করিম কিরন, মানিক পলাশ বকুল পারুল চির সবুজ রুপসি বাংলার স্যামল মাটি অঙ্গে মাখি হাত ছানি দিয়ে ডাকছে আমাকে, আয় আয় বন্ধু অনেক দিন পরে হলো তোর সাথে মোলাকাত,আয় বন্ধু একটু খেলি তোর সাথ। আমি আমার অক্ষমতার কন্ঠে গেয়ে উঠি।আগে দে মা মোরে এক মুঠো মাটি, পরে দিস মা এক মুঠো ভাত, আমি একটু খেলে আসি আমার সাথিদের সাথ।
তার পর কয়েকটি শালিক টিয়া ঘু ঘু বুলবুলি মাছরাঙা ডাহুক ছবা বক সমবেত কন্ঠে গেয়ে উঠলো একটি দেশাত্ব বোধক গান, এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্ম ভূমি।সে যে আমার জন্মভূমি।তাদের কন্ঠে এ মধুর গান শেষ হতে না হতে একটি দোয়েল এসে করুন সুরে গেয়ে উঠলো, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস আমার প্রানে বাজায় বাঁশি, ওমা আমার প্রানে বাজায় বাঁশি।আমি তোমায় ভাল বাসি।
বাংলার চির চেনা সে দোয়েলের সাথে আমি কন্ঠ মিলাই। সাথে সাথে আমি আমার রক্ত মাংশের সে দুঃখিনী মা কে হারানোর দুঃখ ব্যদনা শোখ সব কিছু ভুলে সবুজ স্যামল মাটির মাকে আমি মা ডাকতে শুরু করে দেই।একটু খানি স্নেহ মায়া মমতা পাওয়ার জন্য আমি আমার এতিম শরিরটাকে তার লাল সবুজ শাড়ির আঁচলের নীচে লুকাই।সে থেকে আর কোন দিন আমি আমাকে আর একটুও এতিম মনে করিনা।আমার বাবা নেই তো কি হয়েছে, আমার তো একজন মা আছে। আমার মা নেই আমার মা আছে আমার পরম মা, আমার বাংলা মা। এই মাটির বাংলা মাকে পেয়ে আমি আমার সকল দুঃখ যন্ত্রনা ভুলে গিয়েছি, ভূলে গেছি স্বজন পরিজন ভাই বোন বাবা মা হারানোর শোখ।
আজ অবিশ্বাস হলে ও সত্যি আমার সে মাটির মা যাকে আমি পরম মা বলে ডাকি, সে মায়ের দেখি করুন হাহাকার।ছোট একটি মাকড়সার মত আমার সে মাটির দুঃখিনী মা।এতই ছোট যে তার ছোট ছোট আটটা পাঁ ছুতে পারে শুধু টেকনাপ থেকে তেতুলিলিয়া পর্যন্ত।মাঝখানে সুতার মত চিকন,আধা ধড় আধা পেট, তারি মাঝে পনর কুঠি সন্তান কে আঁকড়ে ধরে কত দুঃখে কস্টে কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে হিমশিম খেয়ে বেঁচে আছে।বারে বারে কত হায়েনা শকুন দিয়েছিল থাবা,চিন্নভিন্ন করেছিল মায়ের শরির বিষাক্ত নখের আঁচরে করেছিল ক্ষত বিক্ষত।এসে ছিল কতো বেনিয়া গোলাম হার্মাদ ওলন্দাজ, মগ আরো কতো জলদস্যু ভূমি দস্যু, তার উপর দুর্দশ্য ডাকাতের মত বারে বারে হানা দেয় কত গৃহ দুষমন খরা বন্যা জল উছস্যাস।চিরতরে খতম করে দিতে চেয়েছিল আমার মাকে, তবু কিন্ত অসম্ভব হলেও সত্যি আমার মা দিগ্বীজয়ি হয়ে বেঁচে আছে পনর কুঠি সন্তানেরে আঁকড়ে ধরে।
আজ আমার সেই পরম করুনা ময়ি মাটির মা এর বুকে এ সব হচ্ছে কি? আমরা নয় মাস স্বশস্র যুদ্ধ করে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাক বর্বরদেরকে চিরতরে তাড়িয়ে দিয়ে আমার মায়ের মান রেখেছি।আজ সে মায়ের মান সন্মান নিয়ে সে একাত্তরের পরাজিত সত্রু স্বদেশি রাজাকাররা কি করে পারে এমন অরাজকতা সৃস্টি করতে।কেমন করে হেপাজতি আর জংলী জংগীবাজের উত্থান হয় স্বাধিন বাংলার মাটিতে।কেমন করে আজ একজন বাঙালি ভাই বাঙালিকে প্রকাশ্যে পথে প্রান্তরে নির্মম ভাবে কুপিয়ে গুলি করে হত্যা করতে পারে? কেমন করে একজন খাঁটি মুসলমান তার প্রিয় মুসলমান ভাইকে জবাইকরে হত্যা করতে পারে? আজ কেন আমার মায়ের বুক হয় এত রক্তে রঞ্জিত? আমার ভাইয়েরা কেন এত খুন আর গুম হয়? আজ কেন রাজনিতীর এত ধন্ধ কলহ? কেন এত হরতাল ধর্মঘট কেন এত জ্বালাও পোড়াও আর তীলে তীলে গড়া আমার মায়ের সম্পদ ধ্বংশ করা?
আজ আমার সেই দুঃখিনী মায়ের শরির কামড়ায়ে কামড়ায়ে খাচ্ছে তারি উদরে জনম নেওয়া তারি কতো গুলি কূলাঙ্গার ছেলে।আজ ভয়ে বাঁচে মানুষ ভয়ে মরে, ভয়ে আগামি প্রজন্মের শিশু জন্ম নেয়। ঠিক মাকড়সার মতো আমার মায়ের এই করুন পরিনতি দেখে আমার বুকে আজ আরো বেশি করে আগুন জ্বলে, শুধু ধাউ ধাউ করে।
শুনো বন্ধু শুনো, আজ আমার হৃদয়ে আগুন জ্বলে এক সাগর রক্তের দামে কেনা আমাদের প্রবিত্র স্বাধিনতার ইতিহাস বিকৃত দেখে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে স্বাধিন দেশে আমাকে পরাধিন বলে মনে হয় বলে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে স্বাধিন সোনার বাংলার মাটিতে আমার সাভাবিক মির্ত্যুর ঘেরান্টি নেই বলে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে তিরিশ লাখ সহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি দেখে। আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে স্বাধিনতার ঘোষনা নিয়ে এ হেন তুচ্ছ ঘঠনা এত বিবেধ বিশৃন্খলা দেখে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে সচেতন বুদ্ধিজিবীদের মুখে কান্ডজ্ঞ্যন হীন কথা শুনে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে বীর খেতাব দারি মুক্তি যুদ্ধাদের মুখে অযোক্তিক আর রাজাকারের পক্ষে কথা বলা দেখে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে মিডিয়াতে জাতিকে বিব্রান্ত করার অপপ্রচার দেখে।আজ আমার বুকে আগুন জলে টিভিতে নস্ট মাথাদের টকশো দেখে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে আমাদের জাতিয় নেতা,যারা আমাদের মহান স্বাধিনতা যুদ্ধের সফল নেতুত্ব দিয়েছিল,যাদেরকে আমরা আর আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম আদর্শ ভাববে তাদের খামোশি নস্ট চরিত্র দেখে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে রাজাকার আর হেফাজতিদের আস্ফালন দেখে।আজ আমার বুকে আগুন জ্বলে পৃথিবীর শ্রেস্ট ধর্ম আমার সকল বিশ্বাস ভালবাসার ধর্ম ইসলামের অপব্যাখ্যা ও অপব্যবহার দেখে।
শুনো বন্ধু শুনো অনেক দুঃখে কস্টে খোবে অভিমানে আজ আমি জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হচ্ছি।দেখো বন্ধু আমরা সবাই অদলিয় মুক্ত ভোটার আমরা সাধারন মানুষ, আমরাই সকল ক্ষমতার উৎসহ।আমরাই নিজ হাতে সরকারি দল তথা এই কূবের সরকারকে আমাদের মহান মূলবান ভোট দিয়ে আমাদের প্রবিত্র সংসদে পাঠিয়েছি পাঁচটি বছরের জন্য।যে সরকার আমাদের জীবন যাত্রার মান উন্যত করে আমাদের মৌলিক চাহিদা গুলি গ্যাস বিদ্যুৎ পানির চাহিদা গুলি পুরন করবে।যুদ্ধা অপরাধির বিচার করবে।সন্ত্রাসি চাঁদা বাজ নির্মূল করবে, ঘুষ দূর্নিতি বন্ধ করবে।দ্রব্য মূল্যের উর্দগতি রোধ করবে।কিন্থু এ সরকার আমাদের মহান সংসদ ভবনে বসেই আছে ভারি ভোজার মত, অতচ পাঁচটি বছর প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আমরা সাধারন জনগন বিরুধি দলকে আমাদের মহা মূল্যবান মান্ডাট দিয়ে পার্লামেন্ট এবং রাজপথ দুটাই দিয়েছি, যে বিরুধি দল আমাদের পক্ষে থেকে আমাদের কথা বলবে।আমাদের জন্য হক কথা বলবে, এমন কি আমারদের সাথে লড়বে।সে বিরুধি দল রাজপথ পার্লামেন্ট দুটাই বাদ দিয়ে বেছে নিয়েছে কারাগার।অতচ আমাদের মূল্যবান পাঁচটি বছর গত হয়ে গেছে।
শুনো বন্ধু সরকারি বেসরকারি দুটা দলেরই কান্ডকির্তী দেখে আজ আমার বুকে আরো বেশি আগুন জ্বলে। ধাউ ধাউ করে জ্বলে।তোমরা যদি পারো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে আমাকে ভস্ম করে নিঃস্বেশ করে দাও। আমি আর এভাবে জ্বলতে চাইনা।
..........ফারুক, ------ফারুক, জার্মানী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
alles gute