নিবন্ধ,

    আমার অহঙ্কার আমি বাংলাদেশি
আমার অহঙ্কার আমি একজন বাংলাদেশি এবং খাঁটি বাঙ্গালি বলে । এক সময় পশ্চিম পাকিস্তানিরা শুধু আমাদেরকে শাসন শোসন জুলম অত্যাচার আর নির্যাতন নিপিড়ন করেই ক্ষ্যান্ত থাকেনি, তারা আমাদেরকে রিতিমত ঘৃনাও করতো । আমাদের চালচলন বলন কহন দৈহিক ঘঠন খাহন পরন সব কিছুকেই তারা ঘৃনার চোখে দেখত ।আমরা লুঙ্গি পরি, আমাদের মা বোনেরা হিন্দুর মত শাড়ি পড়ে কপালে  লাল টিপ দেয়, আমরা চাউল মাছলি খাওনেওলা বাঙ্গালী, আমরা বানর বা পশুর মত হাত মুছরে খাবার খাই, খাবার সময় তরকারির ঝোল আমাদের কনুই পর্যন্ত গড়িয়ে পড়ে।আমরা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ভাল করে দুহাত সহ মুখ ধুই না।আমাদের সোনার বাংলাকে তারা মনে করত একটা জাহান্নাম । প্রতিবছর এখানে  খরা বন্যা ঘূর্নি ঝড় জলউচ্ছাস হয়ে থাকে ।তাদের মত আমরা ভাল ইংরেজি বলতে পারি না ।আমাদের মাতৃভাষাকে তারা মনে করতো হিন্দুর ভাষা । আমাদের সংস্কৃতিকে হিন্দুর সংস্কৃতি বলে তারা তামাসা করত সবসময় ।সর্বোপরি আমরা জাতি হিসেবে চুতিয়ার জাত্।
আর সেই কারনেই তারা সর্ব প্রথম আমাদের মহান মাতৃ ভাষাকে হরন করার অপচেস্টায় লিপ্ত হলো । মুহাম্মদ আলী জিন্না আমাদের মুখের বাংলা ভাষাকে বাদ দিয়ে উর্দু ভাষাকে সংযুক্ত পাকিস্তানের রাস্ট ভাষা হিসেবে  ঘোষনা করে । সালার সাহস কত বড় ছিল ।অতচ সে নিজেই ভাল উর্দু বলতে পারতনা।যে বাংলা ভাষা তারও চল্লিশ বছর আগে মহা কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর এর নোভেল প্রাইজের মাধ্যমে বিশ্ব মানের সিকৃতি লাভ করে ।যে বাংলা ভাষা ছিল সারা পৃথিবীর আট নয়শ ভাষার মধ্যে অগ্রগামি একটি প্রগতিশিল ভাষা, এবং সপ্তম স্হানের অধিকারি,সে ভাষাকে নিসিদ্ধ`? অতচ সে সময় উর্দু ভাষা ছিল পশ্চাদপদি একটা নিম্নমানের ভাষা । সমগ্র পাকিস্তানের মাত্র পাঁচ পার্সেন্ট লোক উর্দু ভাষায় কথা বলতে পারতো ।
সেদিন  সরল সিদা বাঙ্গালী মুসলমানরা দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে  ইসলামি আদর্শে অনুপ্রানিত ও ভাতৃত্ববোধে  আবেগি হয়ে হাজার মাইলের ব্যবধানে পূর্ব পশ্চিম নামে  একটা অদ্ভূত পাকিস্তান রাষ্ট শুধু মুখে মুখে গঠন করে ফেলেছিল ।রাষ্ট গঠন করেই তারা আবার রাষ্টের মূল ভিত্তি পুর্নাঙ্গ সংবিধান প্রনয়ন না করেই মার্কিন সামরাজ্য বাদিদের হাতে একটা স্বাধিন রাষ্টকে তুলে দিয়ে তারা লাফালাপি শুরু করতে লাগলো ।তাদের সামরিক বাহিনীর লোকরা মার্কিন যুক্ত রাষ্টের ভরন পোষন ও মদদে নিজেকে ভাবতে লাগল মার্কিনী বলে আর পাঞ্জাবীরা নিজেকে ভাবতে থাকে ওরিয়েন্টালিষ্ট হিসেবে । তাদের আস্ফালন আর অহঙ্কার চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে  সত্তরের জাতীয় নির্বাচনের আগে ।তারা তখন বাঙ্গালীকে শুধু বাঙ্গালী হিসেবে নয় মুসলমান এমন কি মানুষ হিসেবে ভাবতেও দ্বিধাবোধ করতে লাগল ।আর সে কারনেই তারা  বাঙ্গালীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অনেক গড়িমসি করে শেষ মেষ একাত্তরের ছাব্বিশে মার্চ এর কালো রাতে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠলো ।তারা হায়েনার মত নিরস্র অসহায়  বাঙ্গালীর উপর তখন ঝাঁপিয়ে পড়ল, যখন মাত্র চার মাস আগে ভয়ানক ঘূর্নিঝড়ে দশ লক্ষাধিক বাঙ্গালীর প্রান কেড়ে নিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে সর্বহারা এবং দিশেহারা করে তুলেছিল । ঠিক তখনই ।
তারা সেদিন নয় মাসের মধ্যে তিরিশ লক্ষ বাঙ্গালীকে শুধু হত্যা করেনি, তারা  লক্ষ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত লুন্টন করেছে, তারা অসহায় মানুষের কুড়ে ঘরে আগুন দিয়েছে, তারা বাঙ্গালির রিলিপের কুঠি কুঠি  টাকা এবং দ্রব্য সামগ্রি লুটে নিয়ে যুদ্ধে ব্যবহার করে বাঙ্গালীকেই নিঃশ্বেষ করার অপচেষ্টা করেছে ।আর অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি পাকিদের এমন কুকর্মে আমাদেরই জাত ভাই বাংলা মায়ের কিছু কুলঙ্গার  নালায়েক বেটারা রাজাকার আলবদর বাহিনী ঘঠন করে নিলর্জের মত তাদেরকে সর্বতভাবে সহযোগিতা করেছে। তারা বর্বর পাকিদেরকে গ্রামবাংলার আঁকা বাঁকা মেঠ পথ দেখায়ে দিয়েছে । তারাই বাদাম্মার মত নিজের মা বোনকে, পাক বর্বরদের হাতে তুলে দিয়েছে ধর্ষন করার জন্য ।
আজ অনেক বছর পরে হলেও  বর্বর পাকিদের দোসর বাংলা মায়ের গৃহ দুষমন আমাদের চির সত্রু মীরপুরের কষাই নামে খ্যাত রাজাকার কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়াতে আমার অহঙ্কার আরো শতগুন বেড় গেল । প্রবাসে বসে প্রবাসি বন্ধুদের সাথে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে আমি আজ গর্ববোধ করছি ।সবাইকে আমার বাঙ্গালী সালাম, জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু ।
                                                                                                             -------মোঃ ফারুক, জার্মানী ।






No comments:

Post a Comment

অজ্ঞসব জনপ্রতিনীধি,

সত্যই শক্তি, সত্যই সুন্দর,