জগদিস চন্দ্র বসু
|
১,--একমাত্র বাঙ্গালী বিজ্ঞানী স্যার জগদিস চন্দ্র বসু। তিনি একসময় প্রথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি একাধারে পদার্থবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, এবং কল্পোবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ছিলেন।তাকে বলা হয় রেডিও বিজ্ঞানের জনক।কারণ তিনিই প্রথম বিদ্যুতের মাধ্যমে তরঙ্গ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
বাংলাদেশের ময়মনসিং জেলায় তার জন্ম হলেও পিতৃনিবাস ছিল ঢাকার বিক্রমপুরে।তিনি বহুবিদ প্রতিভার অধিকারি ছিলেন।বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষনা ধর্মি অসংখ্য প্রবন্ধ লিখে এবং বিশ্বের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাসন বিবৃতি দিয়ে তিনি খ্যাতি কুড়ায়েছেন।সে যাই হঊক আমি তার ব্যাপারে বিস্তারিত না লিখে ছোট একটি গল্পের কথা শেয়ার করছি।
আমরা সবাই কম বেশি জানি স্যার জগদিস চন্দ্র বসু একজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী হিসেবে।বৃক্ষ ব্রততী কিংবা গাছপালার ও যে প্রাণ আছে, তা তিনিই প্রথম প্রমান করেন।গাছপালাকে তিনি নিজের সন্তানের মত ভালোবাসতেন।
গাছপালার উপর গবেষনা করতে গিয়ে তিনি তার ঘরের দু দিকের দুবারান্দায় কিছু গাছপালাকে দুভাগে ভাগ করে লালন পালন করতে লাগলেন। সার পানি যা যা দরকার উভয় দিকের গাছগুলিকে সমান ভাবে দিয়ে যাচ্ছিলেন ।কিন্তু সেবা যত্ন কিংবা ভালোবাসা দেননি সমানভাবে।
তিনি রোজ খাবার(পানি) দিতে গিয়ে এক বারান্দার গাছগুলিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন।যেমনঃ-তোরা বেয়াদপ বদমাস,ছোট লোক,কুৎসিত কদাকার, কমবকত শরম হায়া নাই। খামাখা তোদের জন্য এত কষ্ট করতেছি,তোদের দিয়ে কিচ্ছু হবেনা, ইত্যাদি।
আর অন্যদিকের গাছপালা গুলিকে পানি দিয়ে আদর যত্ন করে রোজ বলতেন,তোদের মত এত সুন্দর সতেজ এত ভালো গাছ কি পৃথিবীতে আর আছে?তোদের দিয়েই সৃষ্টি হবে সুন্দর পরিবেশ, আমি তোদেরকে অনেক অনেক ভালোবাসি ইত্যাদি।
বেশ কিছুদিন পরে বিজ্ঞানী বসু দেখতে পেলেন গালিগালাজ খাওয়া গাছগুলি মরে শুকায়ে কাঠ হয়ে গেল।আর আদরযত্ন এবং ভালোবাসা পাওয়া গাছগুলি আরো বড় সতেজ ও সুন্দর হয়ে উঠেছে।
তিনি অবাক বিশ্মিয়ে দেখলেন যে খোবে দুঃখে অভিমানে শরমে ভরমে গালি খাওয়া এক বারান্দার গাছগুলি মারা গেল। বলা যায় আত্মহত্যা করলো। আর অন্য বারন্দার গাছগুলি আদর যত্ন স্নেহ ভালবাসা পেয়ে মোটা তাজা ও সতেজ সুন্দর হয়ে উঠলো।
কি বিশ্ময় ঘটনা--!গাছপালার মধ্যেও প্রাণ আছে, লজ্জা শরম হায়া কিংবা খোব অভিমান দুঃখবোধ মান অভিমান আছে।বনের জংলী জানোয়ারের মধ্যে ও আছে। কিন্তু অকল্পনিয় হলেও সত্য,এই পৃথিবীতে কিছু মানুষের মধ্যে তা নাই। বিশেষ করে এই বাংলা দেশের কিছু বাঙ্গালীর মধ্যে নাই। মোটেই নাই।
মহাভারতে দেখতে পাই আজ থেকে আড়াই হাজার বছর পূর্বে দ্বিতীয় পান্ডব ভীম মঘধ রাজাকে বধ করে এই জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। পান্ডব ভীম তখন এই বঙ্গভূমির নাম রেখেছিল অঙ্গভূমি।
কিন্তু চাটুকার পরের তোষাম্মদি পাঁ লেহনকারির নিমক হারামীতে এই জাতি ধরে রাখতে পারেনি তাদের গর্বের স্বাধীনতা।বার বার এই জাতিকে পরতে হয়েছে পরাধিনের জোয়াল।বার বার এই নিমক হারাম নিকর্মা জাতি হারিয়েছিল তাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা।
হাজার হাজার বছর ধরে এই বাঙ্গালী জাতি মঘ হার্মাদ ওলন্দাজদের হাতে নেড়ি কুত্তার মত লাথি উষ্টা অবহেলা অপমান চড় থাপ্পর মার খেয়েছে।লর্ড ক্লাইবের জীবনী থেকে জানতে পাই সুজলা সুফলা সুখি সমৃদ্ধ স্বাবলম্ভি বাঙ্গালীরা ভীনদেশি জলদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে নিজের সঞ্চিত সম্পদের কিঞ্চিত পরিমান সঙ্গে নিয়ে গাট্টিগোট্টা গুটায়ে বনের হিংস্র জানোয়ারের ভয় ডর উপেক্ষা করে জঙ্গলে লুকায়ে প্রাণ বাঁচাতো। প্রতিরোধ প্রতিবাদ করার মত কোন ক্ষমতা সামর্থ কিংবা শাহস ছিলনা এই জাতির।
দুশত বছর ইংরেজরা এই বাঙ্গালী জাতির উপর চালিয়েছে জুলুম অত্যাচার নিপিড়ন।জবরদস্তি করে দিনের পর দিন ঘানি টানিয়েছে, নীল চাষ করিয়েছে।কত ত্যাগ তিতীক্ষা ও রক্তের বিনিময়ে ইংরেজরা বিতারিত হলেও,দুর্ভাগা এই জাতির উপর জগদ্দল পাথরের মত চাপিয়ে বসলো পাক হায়েনা নামক পাকিস্তানীরা।ছলে বলে কৌশলে প্রায় চব্বিশ বছর তারা শুধু জুলম অত্যাচার নিপিড়ন চালিয়েছিল এই নিরিহ বাঙ্গালীর উপর।তারা সুজলা সুফলা বাংলার ধন সম্পদ লুন্ঠুন করে ঐ মরু পাকিস্তানের বেআবাদি জমিকে আবাদ করেছে। গড়ে তুলেছে উঁচু উঁচু দালান কোঠা। পরিত্যক্ত জায়গায় সুপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তুলেছে বিশ্বমানের ইসলামা বাদের মত রাজধানী শহর।অতচ এই বাংলায় তারা একটা আলফিনের ফেক্টরি পর্যন্ত গড়ে তুলেনি। খাঁটি সোনার চেয়েও খাঁটি বাংলার মাটি, যে মাটিতে বছরে চার বার সোনালি ফসল ফলে, সে বাংলার মানুষ মরে ক্ষিদায় রোগে শোকে খরায় বন্যায় প্রাকৃতিক দুর্য্যগে। অতচ আবাল পাকিরা দেখেও দেখেনা।বরঞ্চ তারা কাজে কর্মে আচার আচরণে ঘৃণা প্রকাশ করতো এই বাঙ্গালী জাতিকে। উপহাস তাচ্ছিল্য করে বলতো বাঙ্গালী চুতিয়াকা জাত হ্যায়। চাউল মাছলি খানেওলা জাত।
অবশেষে শত চেষ্টায় শত সহস্র বছরের অবিরাম যুদ্ধও ত্যাগের বিনিময়ে তিরিশ লাখ শহীদের তাজা প্রাণ আর দুলক্ষাধিক মাবোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাঙ্গালী জাতি পেল স্বাধিনতা।হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙ্গালী জাতির জনকের একক নেতৃত্বে বাঙ্গালী পেল মহান স্বাধিনতা।
মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই এই বাঙ্গালী জাতি তার জনককে নির্মম ভাবে স্বপরিবারে হত্যা করে প্রমান করলো, তারা যে কত বড় জগন্য ও বেঈমান। খোবে দুঃখে অভিমানে মরে যাওয়া ঔ গাছপালা লতাপাতার চেয়েও নিঃকৃষ্ট এই বাঙ্গালী জাতির কিছু কুলাঙ্গার। গাছপালার লজ্জা শরম হায়া আছে, কিন্তু এই কুলাঙ্গার বাঙ্গালী জাতির লজ্জা শরম হায়া বলতে কিছু নেই। কিছু বাঙ্গালী আজো রাজাকারই রয়ে গেল, তারা ইংরেজ আর পাকিদের গুনগান করে প্রমাণ করে তারা যে আসলেই গোলামের জাত গোলাম।পাছায় লাথি মারলেও তারা পেয়ারে পাকিস্তান বলে নেঁজ নাড়ে নেড়ি কুত্তার মত।
শিয়ালের ঘরে ১০০% শিয়ালের বাচ্ছাই জন্ম নেয়।কুত্তার ফয়দাসে ১০০% কুত্তার বাচ্চাই জন্ম নেয়। কিন্তু এই বাঙ্গালী জাতির ঘরে জন্ম নিয়েছে অসংখ্য জানোয়ারের বাচ্ছা। অসংখ্য শিয়াল কুকুরের বাচ্চা।তারা আজো পাকিদের পাঁ চাটে। তারা আজো তিরিশ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, সন্ধেহ করে। আর যাই হউক,এরা কোনদিন মানুষ হতে পারেনা, এরাই জানোয়ারের বাচ্চা,এটাই প্রমাণিত সত্য।
২,-- জানোয়ার জেনারেল,রা ঁঁঁঁঁঁ
মিশরের কর্নেল জামাল আব্দেল নাসের থেকে পাকিস্তানের জেনারেল আয়ূব খান,
জেনারেল জিয়াউল হক থেকে বাংলাদেশের জিয়া এরশাদ।
সর্বকালের শ্রেষ্ট বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তার এক প্রবন্ধে বলেছেন,উর্দি পরা জেনারেলরা মস্তক বিহীন জানোয়ারের মত এক আজব প্রাণী।
কর্নেল জামাল আব্দেল নাসের |
মিশরের কর্নেল জামাল আব্দেল নাসেরকে কেউ বলে বিপ্লবি নেতা আবার কেউ বলে জগন্য স্বৈরচার।যে যাই বলুক নাসের ছিলেন মিশরের প্রভাবশালী একজন সামরিক নেতা।পঞ্চাশ ষাট দশকে পুরো আরব এবং আফ্রিকায় এই নেতা অত্যান্ত প্রভাব বিস্তার করেন। তার শাসনামলে আরব জাতীয়তাবাদ ও প্যান আরাবিজম এবং প্যান আফ্রিকাজম এর সুচনা ঘটে। ১৯৬৪ সালে পিলিস্তিনিদের সংঘটন পিলও ঘটনে এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দলনে তার গুরত্বপুর্ন ভূমিকা ছিল।
স্বৈরশাসক কর্নেল গাদ্দাফি হাফিজুল আসাদ সাদ্দাম হোসেন উগান্ডার ইদি আমিন কঙ্গোর মুবাট্টো থেকে পাকিস্তানের আয়ূব খান এরা সবাই নাসেরের অনুসারি কিংবা অনুরক্ত ভক্ত ছিলেন।আবার নাসের ছিলেন ইসলামি ব্রাদার হুডের অনুসারি।
তরুন বয়সে সব কাজে অযগ্য হয়ে এই নাসের এক মন্ত্রির সহযোগিতায় মিলিটারিতে ভর্তি হওয়ার চান্স পান। বস তারপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। মিলিটারি এবং পুলিশ এমন কি ল কলেজেও ভর্তি হতে গিয়ে বাদ পড়ে যান নাসের। মিলিটারিতে ভর্তি হওয়ার অল্প কয় বছরের মাথায় তার সিনিয়র আরেক জেনারেল মোহম্মদ নাজিবকে নিয়ে প্রথমে ১৯৫২ সালের শুরুর দিকে রাজা প্রথম ফারুককে গদিচ্যুত করে দেশ ত্যাগ করতে বাদ্য করেন। দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহি রাজতন্ত্রকে বিলুপ্ত করে জেনারেল নাজিব নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষনা করেন।অবশ্য রাজা ফারুকের শিশু পুত্র ফুয়াদকে নামকাওয়াস্তে রাজা ঘোষনা করলেও ১৯৫৩ সালে এসে রাজতন্ত্র সম্পুর্ন বিলুপ্ত করে রাজা ফারুকের ধন সম্পদ নিলাম করে দেন।
জেনারেল জিয়াউল হক |
রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে তারা ঐতিহাসিক বিপ্লব বলে আখ্যায়িত করেন।তাদেরকে এই বিপ্লবেসহযোগিতা করে ১৯২৮ সালে হাসান আল বান্নার গঠিত ইসলামি ব্রাদারহুড সংঘটন।পরে এই ব্রাদারহুডকে নিয়েই জেনারেল নাজিব ও কর্নেল নাসেরের মধ্যে সংঘাত বাধে।এবং এক পর্যায়ে নাসের জেনারেল নাজিবকে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারি হয়ে যান।আর অপরদিকে ঐ ব্রাদারহুডের শত শত সদস্যকে ফাঁসিতে ঝুলায়ে হত্যা করেন।হত্যা করেন জেনারেল নাজিবের শত শত অনুসারিকে এবং অসংখ্য শ্রমজীবি মানুষকে।
জেনারেল নাজিব এবং নাসের গং রাজা ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, ফারুক বিলাস বহুল জীবন যাপন করেন এবং সে একজন নারী লোভি। সে যৌনশক্তি বৃদ্ধির জন্য সপ্তাহে ৬০০টি কাঁছা ঝিনুক খান। বেন্টলি গাড়ি চালান। নাশপাতির মত হিরা ব্যবহার করেন ইত্যাদি।
১৯৬৪ সালের ১৮ই মার্চ রাজা ফারুক রোমে মারা যান।অভিযোগ উঠে নাসেরের গোয়েন্ধা বাহিনী বিষ প্রয়োগে রাজাকে হত্যা করে।মির্ত্যু পথযাত্রি রাজার অন্তিম ইচ্ছা ছিল কায়রোর আল্ রিফা মসজিদে অন্তিম শয়নের। কিন্তু নাসের রাজার লাশ মিশরে নিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ঔ সময় সৌদি বাদশা ফয়সল সৌদি আরবে রাজা ফারুকের লাশ দাপন করার জন্য বলে।পরে অবশ্য নাসের রাজি হয় এই সর্তে যে লাশ মিশর নেওয়া যাবে তবে আল রিফা মসজিদে দাপন করা যাবেনা।ইতিমধ্যে স্বজনরা রাজার লাশ রোমেই দাপন করে ফেলে।কিছুদিন পর গোপনে রোম থেকে রাজার লাশ মিশরে নিয়ে ইবরাহিম পাশা নামে গোরস্হানে দাপন করা হয়।নাসেরের মিত্যুর পর আনোয়ার সাদাত রাজা ফারুকের দেহাবশেষ তুলে নিয়ে সেই রিফা মসজিদেই দাপন করেন।
আমরা যদি ৫০-৬০ কিংবা ৭০-৮০ দশকের দিকে তাকাই। দেখতে পাই এই তিন চারটা দশক ছিল দেশে দেশে স্বৈরচার কিংবা জানোয়ার জেনারেলদের উত্থানের দশক। মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র ও ইউরোপের সামরাজ্যবাদী দুষ্ট চক্রের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদে এই সব ডিক্টেটররা নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে কিংবা দেশের স্বনামধন্য রাজা বাদশাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে।
১৯৫৮ইং সালে স্বৈরশাসক জেনারেল আয়ূব খান যে ভাবে অখন্ড পাকিস্তানে মার্শাল ল জারি করে ক্ষমতা দখল করেন,--
তখনকার সংসদের স্পিকার জনাব আব্দুল হামিদ সরকারি চাকুরি করার অভিযোগে সরকারি দলের ছয় সদস্যকে বহিষ্কার করেন।যার কারণে সংখ্যাগরিষ্ট হারায় সরকারি দল।তখন সরকারি দলের সাংসদরা স্পিকারকে মারার জন্য ধাওয়া করেন।পরে অধিবেশন বসলে ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলী স্পিকারের দায়িত্ব নেন।দায়িত্ব নিয়েই তিনি বহিস্কৃত ৬জনের সদস্যপদ পুনরায় বহাল করেন।এই কারণে বিরোধি দলের আবুল হাসান সরকার মাইকের স্টান্ডদিয়ে শাহেদ আলীর মাথায় বাড়ি দিলে তিনি আহত হয়ে কোমায় চলে যান, এবং কিছুদিন পরে মারাও যান।এই অজুহাতেই আয়ূব খান মার্শাল ল জাড়ি করে ক্ষমতা দখল করেন।প্রায় দশ ব্ছর তিনি এই ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখেন।বিরোধি দল মতের উপর চালান স্টিমরোলার।আট বছর পরে বাংলার অভিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুকে আগড় তলা ষড়যন্ত্র মামলায় জড়ানো হয়।যার কারণে প্রচুর গন আন্দলনের চাপে আয়ূব খান আরেক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের হাতে ক্ষমতা চেড়ে পালাতে বাদ্য হন।
মিশরের কর্নেল নাসের যে ভাবে ইসলামি ব্রাদার হুডের আদলে আরব জাতীয়তাবাদের সুচনা করেন।ঠিক তেমনি পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়াউল হক আফগানিস্তানের জঙ্গি নেতাদের প্ররোচনায় ইসলামি ব্রাদারহুডের মত হারকাত আল জিয়াদ আল ইসলাম নামে দক্ষিন এশিয়ায় জুড়ে আন্তঃর্জাতিক ইসলামি একটি ভয়ঙ্কর সংঘটন গড়ে তোলেন।। ১৯৮৪ সালে জেনারেল জিয়াউল হক ইসলামি এটম বোম টেষ্ট করে সমগ্র বিশ্বকে চমকে দিয়ে শক্তি প্রদর্শন করেন।যার ধরুন ভারত এবং আমেরিকা জিয়াউল হকের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েন।
১৯৮৮ সালের ১৭ই আগষ্ট এক মর্মান্তিক বিমান ক্রাসে প্রাণ হারান পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক। তার সাথে আরো ছয়চল্লিশ জন লোক জলন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল সামরিক বাহিনীর বড় র্যাংকের অফিসার গন। বিমানটি পাকিস্তানের ভাওয়াল নগর থেকে ইসলামা বাদের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।হঠাৎ করে মাঝ আকাশে বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে দাউ দাউ করে জলে খন্ডবিখন্ড হয়ে জমিনে আছরায়ে পড়লো।একটি যাত্রিও বাঁচল না।বাঁচার কথাও নয়।
আমি তখন পাকিস্তানের করাচি শহরে অবস্হান করছি।কি ভাবে বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ল,এবং কিভাবে জেনারেল জিয়া উল হকের দাপণ কাজ সম্পর্ন হলো টেলিভিশনে তা বিস্তারিত লাইপ কাস্টে দেখানো হয়েছিল সেদিন।আমি বসে বসে টিভির স্ক্রিনে দেখেছিলাম। সত্যিই ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা।
কে এই জেনারেল জিয়াউল হক?অখন্ড ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে জন্ম গ্রহন কারি জিয়াউল হক দিল্লী ভার্সিটি থেকে গেজুয়েসান করেই বৃটিশ সেনা বাহিনীতে ভর্তি হন।সাতচল্লিশের ভারত পাকিস্তান ভিবক্ত হলে জেনারেল জিয়াউল হক পাস্তিান সেনা বাহিনীতে যোগ দেন।মৃদু ভাষি জিয়াউল হক অত্যান্ত পরেজগার ছিলেন।পাকিস্তানে থাকা কালে লোক মুখে শুনেছি এই জেনারেল নাকি ফকির সন্যাসীর মত সব সময় সাথে একটা পানি ভর্তি লোটা রাখতেন।মসজিদে আযান হলেই নাকি তিনি অজু সেরে যে কোন জায়গায় নামাজে বসে পড়তেন। সে কারণে সেনা ছাউনীতে লোটা মেজর হিসেবেও নাকি তার বেশ পরিচিত ছিল।সে জন্যে তিনি সবার কাছে বিশ্বস্তও হয়ে উঠেন।
১৯৭৬ সালে পাক সরকার প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্ট্র জেনারেল জিয়াউল হক,কে জর্ডার্ন সেনা বাহিনীকে প্রশিক্ষন কাজে সহযোগিতা করার জন্য জর্ডানে পাঠান।জর্ডানের বাদশা ছিলেন তখন বাদশা হোসেন। জর্ডার্ন সেনা বাহিনী তখন একটা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বাদশা হোসেনকে গদিচ্যুত করার চেষ্টা করলে জিয়াউল হক সে অভ্যুত্থান রুখে দেন।জুলফিকার আলী ভূট্ট্র এই খবর শুনে খুশি হয়ে সেনা বাহিনীর পাঁচ জন জেনারেলকে ডিঙিয়ে এই জিয়াউল হককে সেনা বাহিনীর প্রধান করেন।কিন্তু এই লোটা মেজর তার প্রতিদান দিলেন মাত্র এক বছরের মাথায় নির্বাচিত রাষ্ট্র প্রধান জুলফিকার আলী ভূট্ট্রকে গদিচ্যুত করে ,এবং মার্শাল ল জারি করে দুবছরের মাথায় ভূট্ট্রকে ফাঁসির মাধ্যমে।
জেনারেল জিয়াউল হক সেদিন টেলিভিসনে এক দীর্ঘ বক্তিতায় বার বার সফত করে বলেছিলেন,মাত্র তিন মাসের জন্য জারি করা হলো এই সামরিক আইন। তিন মাস পরে তিনি একটি সুষ্ট নির্বাচন অনুস্টান করে নির্বাচিত ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে মার্শাল ল উড্র করে আবার বেরাকে ফিরে যাবেন।কিন্তু দুঃখের বিষয় বাস্তবে করলেন তার উল্টোটা।যে ভূট্ট্র তাকে সেনা প্রধান করলেন সে ভূট্ট্রকে ১৯৭৭ সালে রাজা কাসুরি নামে বিরোধি একজন রাজনীতিবীদকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করে কারাগারে নিক্ষিপ্ত করেন। এমন কি মাত্র দু বছরের মাথায় এক প্রহশনের বিচারের মাধ্যমে ভূট্টকে ফাঁসি কাস্টে ঝুলিয়ে হত্যা করেন। সে সময় একমাত্র আমেরিকা ব্যতীত সমগ্র বিশ্বের রাজা বাদশা এবং রাষ্ট্র প্রধানরা জেনারেল জিয়াউল হকের কাছে অনুরোধ করেন,অনুরোধ করেন বিশ্বের মানবধিকার সংঘটন গুলো, ভূট্ট্রকে যেন ফাঁসি না দেওয়া হয়। ভূট্ট্রর দ্বিতীয় স্ত্রি নুসরাত ভুট্টু প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে বলেছেন ভুট্টু আর কোনদিন রাজনীতি করবেন না, এমন কি তারা পাকিস্তান ছেড়ে চিরতরে চলে যাবেন। কিন্তু জেনারেল জিয়াউল হক কারো কথাই শুনেন নাই। লিবিয়ার স্বৈরচার কর্নেল গাদ্দাফি কমান্ড স্টাইলে ভুট্টকে বাঁচানোর প্রস্তাব করেন।ভুট্টু তা প্রত্যাখ্যান করে দেন।
এই স্বৈরচার জেনারেল মিশরের ইসলামি ব্রাদার হুডের আদলে আফগানি জঙ্গিদের সব কয়টা দল নিয়ে গঠন করলেন হারকাত আল জিয়াদ আল ইসলাম নামে একটি আন্তঃর্জাতিক ইসলামি জিয়াদী দল।এই জিয়াদী দলটি পুরো দক্ষিন এশিয়াকে অস্হির করে তোলে।বিশেষ করে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশে ১৫ই আগষ্টের পর স্বৈরচার জিয়া ক্ষমতা দখল করে।এই জিয়ার হাত ধরেই আফগানিস্তানের তালেবানের ন্যয় বাংলাদেশেও নতুন করে জন্ম নেয় ইসলামি ছাত্র শিবির।জন্ম নেয় একের পর এক জঙ্গী সংগঠন।জিয়ার মৃর্ত্যুর পর এই দায়িত্ব নেয় আরেক স্বৈরচার এরশাদ। এরশাদের পর দায়িত্ব নেয় জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রি খালেদা জিয়া।খালেদার আমলে স্বাধীন বাংলাদেশ জঙ্গিদের সর্ঘ রাজ্যে পরিণত হয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে।সৃষ্টি হয় বাংলা ভাইয়ের মত কুখ্যাত জঙ্গিদের।অস্হির হয়ে উঠে জন জীবন।
স্বৈরচার এরশাদ স্বৈরচার জিয়াউল হকের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে পাকিস্তানের মত বাংলাদেশকেও ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষনা করে।জিয়াউল হককে এরশাদ বড় ভাই হিসেবে সন্মোধন করতো।জিয়াউল হক এরশাদকে খোদ পাকিস্তানি নিসান উপাধিতে ভূসিত করে।এরশাদের হাত ধরে আফগানি জঙ্গি নেতারা বাংলাদেশে এসে জেহাদের জন্য সদস্য সংগ্রহ করতে থাকে।প্রায় পাঁচ হাজার বাঙ্গালী আফগানি মুজাহিদে নাম লেখায়ে আফগানিস্তানে যায়।প্রকৃত অর্থে কেউই ইসলামের জন্য যায়নি।এদেরকে লোভ দেখানো হতো আফগানিস্তানের পাহাড়ে নাকি প্রচুর ডায়মন্ডে আছ।একবার যেতে পারলেই হয় লাইপ বনে যায়গা।
--------চলবে---
লম্পট স্বৈরচার এরশাদ |