Monday, July 1, 2013

ডাঃ ইউনুসকে নিয়ে যত তর্কবিতর্ক।

বাংলাদেশের এক জন কৃতি সন্তান এর নাম প্রফেসার ডাঃ মুহাম্মদ ইউনুস।এ কথা নিঃসন্দেহে আজ সারা বিশ্বে সিকৃত।তিনিই এক মাত্র বাংলাদেশি বাঙ্গালী, যিনি শান্তিতে নোভেল পুরুষ্কার পেয়ে তাঁকে ও তার জন্মভূমি বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মিডিয়া এবং অনলাইনের মাধ্যমে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেন।শুধু নোবেল পুরুষ্কার নয়, তার মত এত পুরুষ্কার বাংলাদেশেতো নয় সারা বিশ্বেও আজ পর্যন্ত কেউ পায় নাই।তার কারনেই প্রবাসে আমাদের নতুন একটা ইমেজ তৈরি হয়েছে। যদিও নোভেল প্রাইজটা তাঁকে ও তাঁর প্রতিস্টিত প্রতিস্টান গ্রামিন ব্যংককে যৌত ভাবে দেওয়া হয়েছে।এ কথাটি ভাবতেই গর্বে আমার বুকটা পুলে উঠে।

তাঁকে যেদিন এই নোভেল প্রাইজটা দেওয়ার ঘোষনা করা হলো, সে দিন আমার কর্মস্তলে এক কলিগ এসে প্রথম আমাকে খবরটা শুনালো।আমি তো শুনে খুশিতে আত্মহারা।ঐদিন আমার সহকর্মিটা সারক্ষন কাজের পাঁকে পাঁকে ডাঃ ইউনুস সম্পর্কে নানান প্রশ্ন আমাকে জিজ্ঞেস করলো।আমি তখন ডাঃ ইউনুস সম্পর্কে তেমন কিছুই জানিনা।ডাঃ কামাল হোসেন যখন আওয়ামী লীগ থেকে বাহির হয়ে গন ফোরাম নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তখন পত্র পত্রিকায় তার ব্যপারে কিছু খবর পড়েছি, ওটুকুই।তবুও সেদিন আমি ঐ সহকর্মিটার কাছে সত্য মিথ্যা ডাঃ ইউনুসের অনেক গুনগান করলাম,এবং বাঙ্গালীরা যে অনেক জ্ঞানি ও বুদ্ধিমান, এবং এর আগেও আরো যে দুটা নোভেল প্রাইজ ঘরে তুলেছে, সে কথাটি তাকে বার বার বলে শুনালাম।

সত্যিই ডাঃ ইউনুস একজন মহান ব্যক্তি।অতচ তাঁকে নিয়ে দীর্ঘ দিন যাবত বাংলাদেশে পক্ষে বিপক্ষে অনেক তর্ক বিতর্ক চলিতেছে।পত্র পত্রিকায় ফেসবুকে ব্লগে,কতো রকমের লেখালেখির পরেও বর্তমানে টকশোতে ভাঁড়দের বেফাঁস কথা বার্তা শুনেই আমার এ লেখার অবতারনা।

প্রথমে আমাকে বলতে হচ্ছে, সবাই বলে এবং বিশ্ববাসি জানে যে ডাঃ ইউনুস একজন ক্ষুদ্র ঋনের উদ্যক্তা।আসলে ক্ষদ্র ঋনটা কি, এবং কি ভাবে দেওয়া হয়।তিনি নাকি আশি লাখ দরিদ্র নারিকে এই ঋন দিয়ে আসছেন।একটাকা করে দিয়ে আসলেও প্রতি মাসে তিনি আশি লাখ টাকা দিয়ে থাকেন।এতটাকা তিনি কই পান কে তাঁকে এত টাকা জোগান দিয়েছেন,বা দেন।

আমরা সবাই জানি তিনি উচ্চ শিক্ষিত, এবং প্রফেসারি ডাক্তারির মত অনেক ডিগ্রিও তাঁর আছে।এক সময় তিনি প্রচুর লেখালেখিও করেছেন।কিন্তু আমার মত মুর্খের মনে বার বার একটা প্রশ্নই গুরপাক খাচ্ছে,যে তিনি এতটাকা কোথায় পেলেন, কে তাকে এতটাকা জোগান দিয়েছেন্।

আমার মনে আরেকটা প্রশ্ন জাগে গ্রামিন ব্যাংক যদি একান্ত তারি ব্যক্তিগত সম্পদ হয়ে থাকে, কিংবা আশি লাখ দরিদ্র নারি সদশ্যেরই হয়ে থাকে কি করে সরকার তাঁর বা তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পদ কেঁড়ে নিয়ে যাবে? এটা কি মগের মুল্লুক?কই বাংলাদেশে তো আমারও কম বেশি ধন সম্পদ আছে, কই সরকার তো কেঁড়ে নিল না।সরকারের বাপের শক্তি আছে আমার সম্পদ কেঁড়ে নেওয়ার?

এবার আসা যাক ক্ষুদ্র ঋনের কথায়, ক্ষুদ্র ঋনটা আসলে একটা সমিতির মত।এই ঋনটা যে শুধু দরিদ্র নারি কে দেওয়া হয় তা ঠিক নয়। প্রতিটা গ্রুপে দু একজন স্বচ্চল নারিকে ও রাখা হতো।আমি স্বচোক্ষে দেখেছি বিশ জন নারিকে এক করে সবাইকে পাঁচ হাজার টাকা করে মাথা গুনে প্রথমে একজনকে একসাথে  একলাখ টাকা দিয়ে দিল, পরের মাসে সবাইর কাছ থেকে আবার পাঁচ হাজার টাকা করে লয়ে অন্য আরেক জনকে একলাখ টাকা দেওয়া হলো।পরে দেখা গেল বিশ মাসে ঋনের কিস্তী দিতে দিতে দেড় লাখে পোঁছে গেছে।এভাবে প্রতি জন থেকে দেড় লাখ টাকা করে লয়ে বিশ মাসে দেখা গেল বিশ জন থেকে দশ লাখ টাকা মুনাফা খেলো গ্রামিন ব্যাংক।পৃথিবীর কোন ব্যাংক গ্রামিন ব্যাংকের মতএত বেশি সুদ নেয় না।
অতচ এই আন্চলে এই ক্ষুদ্র ঋনের  সিস্টেমটা ছিল একটা চিরাচরিত নিয়ম। দশ জন এক সাথে কাজ করলে সবাই প্রতি মাসে সমিতি করে দুচার পাঁচ শত টাকা করে একেক মাসে একজন নিত।বা ব্যাংকে জমায়ে আয় উন্নতি করত।ডাঃ ইউনুস  গ্রামিন মানুষের সেই সিস্টেমটাকে কাজে লাগায়ে আধুনিক ক্ষুদ্র ঋনের জনক হয়ে গেলেন।

তার পর প্রশ্ন আসে সত্যিই কি বর্তমান সরকার তাঁর উপর ক্ষুদ্ধ? নোভেল বিজয়ি একজন সন্মানিত ব্যক্তিকে সরকার কেন অসন্মানি করবে?তার অনেক গুলি কারন আছে। তিনি ক্ষুদ্র ঋনের প্রথমে কাজ শুরু করেছেন সরকারি টাকা দিয়েই।তার পর যখন ব্যবসা জমে উঠেছে, তিনি এক দিকে গ্রামিন ব্যাংকের মত আরো অনেক প্রতিস্টান গড়ে তুলে আস্তে আস্তে সরকারের শেয়ারটা চোশা আমের বিচির মত সরকারকে ফিরিয়ে দিতে থাকলেন। আবার অন্য দিকে তিনি দরিদ্র নারিকে দেখাযে বিদেশ থেকে কুঠি কুঠি টাকা সাহায্য এনে নিজের সিন্ধুকে ভরলেন।এমন কি দেশের টাকা গুলি তিনি বিদেশে বিনিয়গ করে তাঁর ব্যবসার প্রসার করতে লাগলেন।বিদেশী প্রচার মাধ্যমেই প্রথম তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারনা শুরু হয়।তার পরই তার দেশের সরকারও তাঁর পিছে লেগে যায়।

 তিনি এ পর্যন্ত যত গুলি পুরুষ্কারের টাকা পেয়েছেন, সে টাকার যদি এক আনি ও তিনি বাংলাদেশে কোন উন্নয়ন কাজে ব্যয় করতেন তা হলে হয় তো বাংলাদেশ আরো কিছুটা উন্নতি করতে পারতো। দেশে কতো আপদ বিপদ গেল, আজ পর্যন্ত শুনি নাই তিনি কোন সৎ কাজে দু এক টাকা খরচ করেছেন, মানুষের  মঙ্গলের কাজে।

তার পিছে বর্তমান সরকারের লাগার মেইন কারন হলো, আমাদের মহান স্বাদিনতার নেতৃত্ব দান কারি বাংলাদেশ আওয়ামি লীগ স্বধীন সার্বভূমিত্বে বিশ্বাস করে।এই দলটি এক সাগর রক্তের দামে কেনা বাংলার স্বাধিনতা অখন্ড রাখতে সদা সচেস্ট।অবশ্য নিন্দুকেরা বলে দলটি দেশকে নিজের সম্পত্তি হিসেবে মনে করে।এটা সম্পূর্ন একটা মিথ্যা কথা।আওয়ামি লীগ চায় না হাজার হাজার বছর ধরে  পরাধিনের ঘানি টানা  শোষিত বাঙ্গালীর উপর আরো কোন ওলন্দাজ হার্মাদ মগ বেনিয়া মার্কিনীরা এসে স্বাধিন বাংলাদেশের মাটিতে এসে তাম্বু ফেলে ঘাঁটি তৈরি করুক।

ডাঃ ইউনুস যেমনি উচ্চাখাঙ্কী তেমনি উচ্চ বিলাসিও। তিনি একবার ডাঃ কামালকে দিয়ে প্রথমে অপচেস্টা করেছিলেন আওয়ামী লীগকে ভেঙে খন্ড বিখন্ড করে নিজেই রাজনিতির প্রান প্রদিপে পিরে আসতে।সে সময় তাঁর ভাষনেই গন ফোরামের গঠন তন্ত্র প্রকাশ পায়।পরে অবস্তা বুঝে তিনি সরে পড়েন। তার পর ফকরুল মহিউদ্দিনের তত্ববধায়ক সরকারের সময় তিনিই সব কল কবজা নাড়তে থাকেন।একদিন তিনি নিজেই ঘোষনা করলেন তিনি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হতে চান।আবার অবস্হা বেগতিক দেখে সরে পড়লেন।রাজনিতির কথা আর মুখেই আনেন না। শুরু করলেন অন্য পন্হা অবলম্বন।
তিনি বিদেশিকে দিয়ে বাংলাদেশকে হুমকি ধমকি দিতে লাগলেন। বাংলাদেশের উন্নতির প্রতিটা ধাপে তিনি বিদেশে বসে কল কবজা নেড়ে বাধা হয়ে সৃস্টি করলেন।তিনি নিজেই নিজের দোষে একজন বিতর্কিত মানুষে পরিনত হলেন।আজ বাংলাদেশে এত বড় রাজনিতিক ক্রাইসিজ যেতেছে, অতচ তিনি কোন গুরত্ব পূর্ন ভূমিকা পালন না করে রহস্য জনক ভাবেই অবস্হান করছেন।এত এত সমস্যা দেশে তিনি কোন একটা সমস্যার ব্যপারে একটু সৎ পরামর্শও জাতিকে দিতে ব্যর্ত্য হলেন, পারলে আরো সমস্যা সৃস্টি করে দিতে পারেন।

ব্যক্তি জীবনে তিনি মাত্র দুটা কন্যা সন্তানের জনক, তাও তারা আমেরিকার নাগরিক। এত টাকা পয়সা তিনি কি করবেন। আসলে তিনি শত শত পুরুষ্কার পেলেও মানুষের ভালবাসার মত শ্রেস্ট পুরুষ্কার এখনো তিনি পাননি।চুয়াত্তর বছর বয়সি ডাঃ ইউনুস বাংলার ইতিহাসে  একজন বিতর্কিত ব্যক্তি হয়েই থাকবেন,এটাই ধ্রুব সত্য।

       -----ফারুক জার্মান প্রবাসি।
 

অজ্ঞসব জনপ্রতিনীধি,

সত্যই শক্তি, সত্যই সুন্দর,