মহান আল্লাহর নামে।
প্রিয়, প্রধান মন্ত্রি জননেত্রি শেখ হাসিনা ওয়াজেদ,সুদুর প্রবাস থেকে অন্তরের অন্তরস্হল থেকে শ্রদ্ধা ও ভক্তি ভরে আপনাকে জানাচ্ছি আমার বাঙ্গালী সালাম।আশা করি অদেখা স্রষ্টার নেক কৃপায় আপনি কুশৌলেই আছেন।আমার কামনা ও তাই।
প্রিয় প্রধান মন্ত্রি আজ কিছু দাবিদাওয়া এবং প্রস্তাবনা নিয়েই আপনার কাছে আমার এই খোলা চিটি লেখা। জানিনা এই পত্র কোনদিন আপনার দৃষ্টি গোচর হবে কিনা।
প্রিয় নেত্রি আসলে সত্যি কথা বলছি, আমি কোন দিনও কামনা করিনি আপনি বাংলাদেশে ফিরে আসুন।আর পিতা মাতা ভাইদের মত নিসংশ ভাবে হত্যার শিখার হউন।আমার মনে ভয় ছিল বাঙ্গালীরা পিতার মত আপনাকেও মেরে ফেলবে।কারন আমি দেখেছি পৃথিবীর কোন জাতি যাহা করতে পারেনি, বাঙ্গালীর রাতের আঁধারে জাতির জনককে হত্যা করে তাহাই দেখায়ে দিয়েছে।বাঙ্গালীরা আরো জগন্য কাজ করতে পারে এবং পারবে। আমি চাইনি কারন আমি কিশোর বয়সে দেখেছি স্বাধিনতার মাত্র সাড়ে তিন চার বছরের ব্যবধানে পনরই আগষ্ট সকালে নেংটা পাগলকে চান তারা পতাকা হাতে দশহাত লাপাতে।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রি, আমি সেই শৈশবে ১৫ই আগষ্ট দেখেছি।সেদিন কেমন যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল সদ্য স্বাধিন বাংলাদেশ। মুহুর্তেই কেমন যেন নিদারুন মলিন মুখা হয়ে গিয়েছিল হেমন্তের প্রকৃতি পানোরমা।কেমন যেন ধুসর তামাটে রঙে চেয়ে গেছে বাংলার আকাশ বাতাস।মহুয়ায় সতেজ দেবদারু গুলো যেন ইউক্লিপিটাসে পরিনত হয়ে নিরবতা পালন করছিল, আর পাখির সুরের মুর্চনার বদলে ব্যঞ্জনাই প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল চারিদিক।সে দিনের কথা মনে করে আমি আজো কাঁদি।
প্রিয় নেত্রি, আমি চাইনি আপনি দেশে ফিরে আসুন, কারন আমি দেখেছি সেদিন বাঙ্গালীরা, কেমন করে সত্যের মুখো মুখি দাঁড়িয়ে মিথ্যাবাদী সেজে তসবি জপতে শুরু করে দিল।কিছু কিছু বেজন্মা কুলাঙ্গার তো এখনো জপছে নিরন্তর।তবু আপিনি দৃঢ় মনোবল ও সাহস নিয়ে স্বদেশের মাটিতে ফিরে এসেছেন।পিতা হত্যার প্রতিশোধ নিতে নয়, বরঞ্চ সত্য প্রতিষ্টা করে অসূভ শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে দেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। আপনি স্বদেশের মাটিতে ফিরে এসেছেন বাংলার চির দুঃখি গরিব মানুষের ভাগ্যউন্নয়ন করতে। আপনি ফেরে এসেছেন অবহেলিত মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে।আপনি সফল হয়েছেনও অনেকটা। আপনি পথহারা বাংলাদেশকে সঠিক পথে ফিরিয়ে এনেছেন।সে জন্য আপনাকে জানাই ধন্যবাদ।বঙ্গ বন্ধুর মত বাঙ্গালী জাতি হাজার বছর পরে হলেও আপনাকে মনে রাখতে হবে। আপনি বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে মাইল ফলক দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছেন।
প্রিয় নেত্রি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাঙ্গালীরা যেই কলঙ্ক তীলক কপোলে লাগিয়েছে তা কোনদিনও মুছে যাবেনা এবং মুছে যাবার মতও নয়। পৃথিবীর সমস্ত সাবান দিয়ে ধুলেও মুছা যাবেনা এই কলঙ্কময় অধ্যায়।বাঙ্গালী সেজে বিশ্বে আজ যতই সুনাম কামাক না কেন বাঙ্গালী বেঈমানের জাত হয়েই থাকবে।
প্রিয় নেত্রি আপনার কাছে আমার দাবিদাওয়া ও প্রস্তাবনা গুলোঃ-
১, আমার এক নাম্বার দাবি হলো প্রবাসিদের জন্য সকল প্রকার ব্যগেজ রুল উড্র করে নিন, এবং কাস্টমের নামে সকল প্রকার হয়রানি থেকে মুক্ত করুন।কারন একবার আপনি গভির ভাবে ভেবে দেখুন আমরা যে আশি নব্বই লাখ প্রবাসি প্রবাস নামের বনোবাসে থেকে হাঁড় ভাঁঙা পরিশ্রম করে দেশটাকে তীলে তীলে গড়ে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছি।আমাদের এই সফলতাকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই।আমরা প্রিয় জনের স্নেহ মায়া মমতা বিসর্জন দিয়ে প্রবাসে হাঁড় ভাঙ্গা শ্রম দিয়ে আশি লাখ প্রবাসি আশি লাখ পরিবারকে সচ্ছল করেছি।পাকা বাড়ি ঘর দোকান পাট বানিয়ে লক্ষ লক্ষ বেকার লোকের কর্ম সংস্হান করেছি।সেই আমরা জাগ্রত বাংলার লড়াকু মুক্তি যোদ্ধারা পরিবার পরিজনের সুখের জন্য যদি বিদেশ থেকে রঙিন টিবি কিংবা সামর্থ থাকলে বিদেশ থেকে বিদেশি গাঁড়ি নেব, এবং দেশেই ব্যবহার করবো, তাতে কেন কাস্টম দিতে হবে কেন? কেন?????? এটাই আমার মাথায় ধরেনা, একটু ভেবে দেখবেন।
২,প্রশাসনের সকল প্রকার হয়রানি থেকে প্রবাসিদেরকে মুক্ত করে তাদের কাজকর্ম গুলি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইন করে প্রয়োগ করুন।কারণ আমরা প্রবাসিরা সারা বছরে ছুটি পাই মাত্র এক মাসের।এই সল্প সময়ে প্রসাসনের ব্যুরোক্রেটির কারনে কোন কাজই সমাধা করা যায় না।তাড়াহুড়া করে আবার কর্মস্হলে ফিরে আসতে হয়।
৩, প্রধানত বাংলাদেশের চার প্রাকারের গৃহ সত্রু আছে। ১, সমুদ্র ও ঝড় বন্যা।২, ঘুষ ও দুর্নিতী।৩,জঙ্গিবাজ ও মৌলবাদ।৪,সন্ত্রাসি চাঁদাবাজ।
এই চার প্রকারের গৃহ সত্রু মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে দেশ বাসিকে নিয়ে এক যোগে কাজ করতে হবে। এখানে আমার প্রস্তাব হলো, প্রকৃতিক সত্রু থেকে মুক্ত হতে দেশি বিদেশি বিশেষ করে নেদাল্যান্ড কোছ থেকে পরামর্শ নিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। আর ঘুষ দুর্নিতী জঙ্গিবাজ ও মৌলবাদ আইন করে নিসিদ্ধ করে কঠোর ব্যবস্তা গ্রহন করতে হবে। আর সন্ত্রাসি চাঁদাবাজকে প্রতি মহল্লায় বা গ্রামে বেসরকারি প্রতিনিধি কমিটি করে দায়িত্ব দিতে হবে যে তারা শুধু নিজ এলাকার উঠতি বয়সি অপরাধিদের খেয়াল ও খোঁজ খবর রেখে তাদেরকে সৎ পথে ফিরে আনার ব্যবস্হা করবে এবং ব্যর্থ হলে আইনের হাতে তুলে দিবে।
৪,সকল প্রকার যুদ্ধপরাধি ও মানবতা অপরাধি দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে ফাঁসি দিয়ে ফাঁসি দন্ড আইনটি চিরতরে তুলে ফেলুন বা বন্দ করে দিন।
৫,কম দামে ইন্টার নেট ও টেলিফো ব্যবস্হা চালু করে মোবাইল চিকিৎসা ব্যবস্হা চালু করেন। যাতে মোবাইলের মাধ্যমে ফোন করে স্হানিয় কোন ডাক্তারে পরামর্শে ছোট খাটো রোগের জন্য ফ্রি চিকিৎসা নিতে পারে।
৬, সকল প্রকার ড্রাগ বা নেশা জাতিয় দ্রব্য নিসিদ্ধ করুন, এবং নেশাগ্রস্হদেরকে সৎপথে ফিরানোর ব্যস্হা গ্রহন করুন।
৭,পতিতা বৃত্তি চিরতরে নিসিদ্ধ করে দিন।
৮,বস্তি গুলি উচ্ছেদ করে ছিন্নমুল মানুষদের জন্য বাসস্হানের ব্যবস্হা করুন।
৯, নিরাপদ সড়ক এবং মানুষের জানমালের হেফাজত করার ব্যবস্হা করুন।
১০,শিক্ষা ব্যবস্হাকে ডেলে সাজাতে হবে। যেমন মাদ্রাসা এবং ইংলিশ স্কুলের ছাত্র ছাত্রিকে প্রাইমারিতেই বাছাই করে যার যে দিকে জোঁক বেশি সেদিকে বা সে লাইনে পাঠিয়ে দিয়ে সেই ভাবেই গড়ে তুলুন।
১১,আমার শেষ প্রস্তাব হলো বাংলাদেশ আওয়ামী ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সবার জন্য একটা দলিয় পরিচয় পত্রের ব্যবস্হা করুন।
আপনার দীর্গায়ু কামনা করে একানেই ইতি রেখা টানলাম---,
-------ফারুক, জার্মানি।
০৭,০৪,১৫