Sunday, May 19, 2019

বাংলাদেশকে নিয়ে কয়জন বিদেশীর মণ্হব্য,




এক,ইটালিয়ান নাগরিক ফ্রাঙ্কো পুছ আমার বেশ কিছুদিনের সুপরিচিত বন্ধু মানুষ।বয়স তার ছিচল্লিশ।ইটালির সারদিনিয়ায় তার পৈত্রিক নিবাস ছিল এক সময়। বর্তমানে তারা জার্মানের অধিবাসি।তার জন্ম কিন্তু জার্মানীতেই।গত দুসপ্তাহ আগে তার সাথে একটি কাজে  আমার অন্য শহরে যাওয়া হয়।সে তার লাল টুকটুকে ফ্রড কম্বি গাঁড়িটা ড্রাইব করছিল তখন। আমি তার পাশের সিটে বসা। মৃদু সুরে গান বাজছে ডেস বোর্ডের অডিওতে।আমি খুবি কম কথা বলা মানুষ।সে শহরে আমরা কাজটা সাকসেছপুলি সেরে ফুরফুরে মেজাজে ফিরছি। আসার পথে হঠাত করে ফাঙ্কোকে জিজ্ঞেস করলাম,তোদের ইটালির অবস্হা এখন কেমন? তু্ই এখানে কেন? আর দেশে ফিরে যাবিনা? বস! আর কি চাই, আমার আর কিছু জিজ্ঞেস করতে হলো না।পুরো আধা ঘন্টা সময় ধরে ফ্রাঙ্কো বলতে লাগলো---

শুনুন ফ্রাঙ্কোর মুখে---ইটালির শারদিনিয়ায় আমার পৈত্রিক নিবাস।সেখানে আমার দাদাদাদির জুটের ফেক্টরি ছিল। অনেক শ্রমিক কাজ করতো সেখানে।আমার বাবাও সে ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল।আমার দাদা পাকিস্তান থেকে জুট ইমপোর্ট করে এনে কারখানায় নানা রকমের ব্যবহারি দ্রব্য সামগ্রি বানিয়ে পুরো ইউরোপে রপ্তানি করতো।প্রচুর টাকা ইনকাম হতো। দাদাদাদির মুখে শুনেছি জুট তখন জুট ছিলনা গোল্ড ছিল গোল্ড।কিন্তু ১৯৭০ সালে হঠাত করে পাকিস্তানে যুদ্ধ শুরু হলে জুট আসা বন্ধ হয়ে যায়।সাথে সাথে দাদার ফেক্টরিও বন্ধ হয়ে যায়।পরে আমাদের দাদাদাদি পুরো পরিবার নিয়ে জার্মানে চলে আসে।এই ফাল্কে ফেক্টেরিতে আমার বাবা চল্লিশ বছর চাকুরি করে ইটালিতে ফিরে গিয়ে গত বছর মাবাবা দুজনই ইন্তেকাল করেছেন।সব শুনে পরিশেষে তাকে বললাম  জুট নামের সেই গোল্ড এর দেশটাই আমার আজকের বাংলাদেশ।জুট-কে আমরা বলতাম সোনালি আঁশ আর তোমরা বলতে গোল্ড।

দুই,তুরকিশ নাগরিক মোস্তফা।বয়স ছাপ্পান্ন।আটত্রিশ বছর ধরে জার্মানে থাকে।আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত প্রতিবেশি ও কলিগ।স্বল্পশিক্ষিত দাঁড়িওলা মৌলবাদী টাইপের মানুষ।তার ছেলে ও সেরকম।তুর্কির গ্রামিন পরিবেশের ডোঙ্গা পায়জামাও ফতুয়া পড়ে মাঝেমধ্যে। সে যাই হউক গত সপ্তাহে কাজের রেস্ট সময়ে কথার ফাঁকে সে আমাকে জিজ্ঞেস করলো তোরা কেন পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে গেলি?দেখ এখন পাকিস্তান কোথায় আর বাংলাদেশ কোথায়? পাকিস্তান কত ধনি আর তোরা কত গরিব। পাকিস্তানের কাছে এটম আছে ইত্যাদি।

মেজাজটা চড়ে গেল তার কথা শুনে।বললাম তুই কিছুই জানিস না।আজ বাংলাদেশে পাকিস্তান থেকে সব সুচকে এগিয়ে আছে।আলাদা হয়ে বাংলাদেশ উচিত কামটাই করেছে।সে বললো না না মোটেই ভালো হলো না। বাংলাদেশের মানুষ আজ খেতে পায়না। ঝড় বৃষ্টি বন্যা হয় সব সময়।অনেক মানুষ মারা যায়।মসজিদের ঈমাম সাহেব ও তাই বলেছে।তোদের দেশ যদি এতই ভালো তো তুই জার্মানে কেন এলি?আমি তাকে গালি দিয়ে ফিরা প্রশ্ন করলাম তোরা চল্লিশ লাখ তুর্কিরা  কেন আসলি জার্মানীতে?কেন নিজের দেশে ফিরে যেতে চাস না?সে বললো, ইহুদীদের কারণে আমরা এখানে এসেছি সেটা তুই বুঝবিনা। 
আমি অনেকবার শুনেছি এবং পত্র পত্রিকায় পড়েছি। মুসলমান ভাই ভাই একসাথে থাকা ভালো ছিল।দেখ ওসমানি সময়ে কত ভালোভাবে সব মুসলিম দেশ একসাথে ছিল।আমরা চাই আবার ওসমানি সময় ফিরে আসুক।ওসমানি খেলাফত আবার কায়েম হবে ইনশাল্রাহ!

এই মুর্খের সাথে আমি বেশি তর্ক করলাম না। দেখলাম যে আমাদের দেশের ব্যপারে তার কোন অভিজ্ঞতাই নাই। সে রাতে লোকটি গাঁড়ি এক্সিডেন্ট করেছে।ভাগ্য ভালো বেঁচে গেছে।তাও আবার আমার গাড়ির সাথে।বেকুবটা পিছন দিয়ে লাগায়ে দিছে।তেম খয়খতি হয় নাই। তবুও একহাজার ইউরো জরিমানা হয়েছে। গাড়িটা ছিল কম্পানির, আমি চালাতাম।


তিন,থমাস ট্রুডো জার্মান নাগরিক। বয়স ৫৪ বছর।বিয়ে শাদি করে নাই। থাকে মা-বাবার বাড়িতে।আমার কলিগ।সে নিজেই কৌতুহলি হয়ে বলতে থাকে তোদের বাংলাদেশে আগে প্রচুর বন্যা হতো অনেক মানুষ মারা যেত,কিন্তু এখন বোধ হয় একটু কম হয়।বললাম তুই ঠিক ধরেছিস, তুলনা মুলক ভাবে এখন একটু কম হয়।হলেও ক্ষয়ক্ষতি একটু কমই হয়।দেখলাম যে লোকটির মোটামুটি অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ সম্পর্কে।জার্মানী কিংবা অন্য দেশের লোকেরা বন্যা দুর্গত গরিব দেশ হিসেবেই জানে।আবার অনেক মানুষ আছে বাংলাদেশ পৃথিবীর কোন জায়গায় অবস্হিত তাও তারা জানে না।এখন অবশ্য পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে।বাংলাদেশকেও বিদেশীরা জানতে শুরু করেছে।মেইড ইন বাংলাদেশ লিখা পোষাক এখন ইউরোপের সুপার মার্কেটে সোভা পায়।দেখে গর্ভিত হই।

                                                                                       ----ফারুক,

Monday, April 1, 2019

বরাবরে শিক্ষা মন্ত্রনালয়,






বরাবরে,

বাংলাদেশ সরকারের সন্মানিত মাননীয়া শিক্ষামন্ত্রি ডা: দীপু মনি (এম পি) সমিপে.....
শিক্ষা মন্ত্রনালয় গনপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার, ঢাকা, বাংলাদেশ।

মাননীয়া মন্ত্রি সাহেবা, আমি প্রথমে বলে নিচ্ছি, আমি একজন জার্মান প্রবাসি।আপনি এও জেনে খুশি হবেন যে আমি আপনার ও উপমন্ত্রি জনাব মহিবুল হাসান ভাইয়েরও একজন অনুরক্ত ভক্ত।আপনারা দুজনই ঐতিহ্যবাহি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মি থেকে সফল মন্ত্রি হয়েছেন, তার জন্য আপনাদেরকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন,ও ভক্তিপুর্ন সালাম।

মাননীয়া মন্ত্রি সাহেবা,আমি আজ অত্যান্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে কয়েকটি আরজি নিয়ে আপনার সমিপে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনি সুনেক দৃষ্টিতে দেখবেন।

প্রথমে আমার প্রশ্ন:১, আমাদের শিশু সন্তান যারা আগামী দিনের জাতির ভবিষ্যত,তারা কেন আজ হাঁস মুরগির খোয়ারের মত সিমিত জায়গায় বিকশিত হচ্ছে...?

আমি মাইজদী শহরের সন্তান হিসেবে বলছি, আপনারা কমুনিটি ক্লিনিকের মত যেখানে সেখানে কেন এতগুলি প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্টানের অনুমতি দিচ্ছেন।দিন দিন ভেঙের ছাতার মত ছোট খাটো আবাসিক ভবনে গড়ে উঠেছে কত বাহারি নামের শিক্ষা প্রতিষ্টান।নাই কোন খেলার মাঠ নাই ল্যাব কিংবা ব্যায়ামাগার, নাই কোন আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্হা। অতচ তারা ক্লাশ সিক্সে ভর্তির জন্য একটা ছাত্রের কাছ থেকে নিচ্ছে ১২-১৫ হাজার টাকা, বেবি ক্লাশের একটা শিশুর জন্য নিতেছে ৫-৬ হাজার টাকা। আবার মাসিক বেতন নিচ্ছে ২-৩ হাজার টাকা। এটা কেমন জুলম।হাঁস মুরগি কিংবা গরুর বাচ্ছাকেও বিকশিত হতে একটা নির্দিষ্ট চরাচরের প্রয়োজন হয়।অতচ স্বাধীন দেশের মানব শিশুর জন্য সেই ব্যবস্হা নাই। এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক নয় কি...?

২, আমাদের শিশু সন্তানকে বিশ্ব মানের মানব সম্পদে গড়ে তুলতে না পারলে এই শিক্ষা ব্যবস্হার প্রয়োজন কি...?

মাননীয়া মন্ত্রি সাহেবা,বর্তমান বিশ্বটাকে বলা হয় গ্লোবাল ভিলেজ।তাই প্রতিটি শিক্ষা ব্যবস্হাকেও (কারিগরি বলেন মাদরাসা বলেন,) বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে না পারলে, আমাদের সন্তানরা  বর্তমান বিশ্বে প্রতিযোগিতায় কোন ভাবেই টিকতে পারবেনা।

৩,মাদরাসা বোর্ডে এ কেমন শিক্ষা ব্যবস্হা...?
 
মাননীয়া মন্ত্রি ডা: দীপু মনি,প্রতিবছর মাদরাসা বোর্ডের আন্ডারে প্রায় ১৪--১৫ লাখ আলিম ও দাখিল শিক্ষার্থি পাশ করে বাহির হচ্ছে।বেশির ভাগই জেনারেল গ্রুপের ছাত্র।মাদরাসা গুলোতে নাই কোন বি এড ডিগ্রিধারি কিংবা উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষক। নাই কোন সাইন্স কমার্স বা অন্য কোন সাবজেক্ট।মাত্র তের বছর বয়সে একটা ছাত্র আলিম দাখিল পাশ করছে, ষোল বছর বয়সে মাস্টার্সসম সার্টিপিকেট দিতেছে।অতচ দেখা যায় বেশির ভাগ সার্টিফিকেটে একটা ছাত্রের জন্ম তারিখ লেখা হয়না।সে দিকে দয়া করে একটু মনোযোগ দিবেন।

মাননীয়া মন্ত্রি আপনার অবগতির জন্য বলছি:-জার্মানে গ্রাউন্ড স্কুলেই অর্থ্যাত প্রাইমারিতেই শিক্ষকরা সিলেক্ট করে দেয় শিশুরা কোন ধরনের স্কুলে  কোন বিষয়ে পড়ালেখা করবে।সেই মোতাবেক অভিভাবকরা সন্তানদেরকে স্কুলে ভর্তি করায়।এখানে ভালো স্কুলে ভালো শিক্ষার্থিকে রাখা হয়, সে যদি ভাল করে তো তর তর করে উপরের দিকে উঠে আবার খারাপ করলে ২য় শ্রেণীর স্কুলে পাঠানো হয়।সেখানে ভালো করলে আবার প্রথম শ্রেণীর স্কুলে পড়ার সুজোগ পায়।উন্নত বিশ্বের দেশের মত আমাদের শিক্ষা ব্যস্হাকেও বিশ্বমানের করার জন্য বিনীত আবেদন করছি।                                 

                                                     ইতি...জার্মান প্রবাসি, মোহাম্মেদ ফারুক,





 

অজ্ঞসব জনপ্রতিনীধি,

সত্যই শক্তি, সত্যই সুন্দর,