Saturday, July 24, 2021

প্রবাসীর জীবন কথা...



প্রাণপ্রিয় জননেত্রি, সংগ্রামি বঙ্গ কন্যা, শেখ হাসিনা,
সুদুর প্রবাস জার্মানীর একটি ছোট্ট  শহর থেকে আপনাকে জানাচ্ছি আমার বাঙ্গালী সালাম, আশা করি আপনি সাদরে গ্রহন করিবেন।
প্রিয় নেত্রি পৈত্রিক সামর্থ্যে এবং নিজের দীর্ঘ জীবনের আন্দলনে সংগ্রামে যোগ্যতা এবং বহুবিদ অভিজ্ঞাতার আলোকে সামগ্রিক ভাবে সোনার বাংলাকে আপনি যেই সোনালী সোপানে নিয়ে গেছেন, তা বর্ণ সঙ্কর আর রক্ত সঙ্কর জাতি স্মরন রাখুক বা না রাখুক, আমি কিন্তু নিশ্চিত আপনি ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবেন।ইনশাল্লাহ!
মাননীয় নেত্রি জাতির জনকের অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করার লক্ষে আপনি অশুভ শক্তির সকল রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে দৃঢ় প্রত্যয়ে ইস্পাত কঠিন  মুষ্টিবদ্ধ হাতে জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তা আমাদের জন্য শিক্ষনিয় এবং অনুকরনিয় হয়ে থাকবে চিরদিন। যদিও কিছু গাঁজাখোর মদখোর এবং বিদেশী দালাল চক্র পিছনের দিকে টানছে অবিরত। 
প্রিয় নেত্রি, আমি আপনার অনুরক্ত ভক্ত। আপনি ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই আপনার লেখা বই গুলি পড়ে আমি জেনেছি যে আপনি  দুরদর্শি জ্ঞানের এবং অসাধরণ গুনের অধিকারি।
প্রিয় নেত্রি, আমি জীবনে প্রত্যক্ষ ভাবে আপনাকে একবারই দেখেছি মাইজদী শহীদ ভূলো স্টোডিয়ামে।একি স্টোডিয়ামে জাতির জনককেও আমি দেখেছি একবার। খুব কাছ থেকেই দেখেছি।সেদিন আপনার কষ্ট ভরা কথা শুনে যেমনি  আমার কিশোর দু চোখের কোনে দিয়ে গড়িয়ে পড়েছিল মোটা মোটা অশ্রু পানি,ঠিক তেমনি জাতির জনকের মুখে  সেই ৭২ সালে উচ্ছাসের কথা শুনেও আমার মত আফ্লুত হয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষের দু নয়ন।
 প্রিয় নেত্রি, আপনি এ যাবত বহু পুরুষ্কার এবং উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন,তন্মধ্য্যে আমার কাছে শ্রেষ্ট মনে হয়েছে মানবতার মা উপাধিটা।সত্যিই মানবতার সকল গুনাবলি আপনার মধ্যে নিহিত আছে।
পুরুষ্কার এবং উপাধি দুটো জিনিসই মানুষকে আরো বেশি মহত এবং উদার করে তোলে।সে খেত্রে আপনি হয়েছেনও আরো মহান।
প্রিয় নেত্রি এই রুঢ় সত্য কথা গুলি বলার মুল উদ্দেশ্য হলো প্রবাসীর জীবন কথা নিয়ে কিছু কথা আপনাকে শুনানোর অভিপ্রায়। আমার অন্তরের এই   হৃদয় নিগড়ায়ে বলা কথা গুলি নিশ্চয় দুদিন পরে হলেও আপনার কানে পোঁছবে। যদি কোন মতে আপনার কানে পোঁছে প্লিজ বিবেক দিয়ে একবার বিবেচনা করে দেখবেন, এবং যদি পারেন ব্যবস্হা নিবেন।মনে রাখবেন মানুষ কেবল হৃদয় দিয়েই সত্য বলতে পারে।
প্রিয় নেত্রি দীর্ঘদিন প্রবাস থেকে গত নভেম্বরে আমি দেশে গেলাম।উদ্দেশ্য ছিল কয়বছর পরে পেনশনে যাব দেশে গিয়ে বাঁকি জীবনটা কাটিয়ে দেব।যে দেশের মাটিতে ঘুমিয়ে আছেন মা বাবা স্বজন পরিজনসহ লক্ষ লক্ষ শহীদান,
সে দেশের সাথে তো আর বেঈমানী করা চলেনা।কিন্তু এবার আমি দেশে গিয়ে আমাদের প্রিয় বৈচিত্র ময় দেশের বাস্তব চিত্র   দেখে আমি বিশ্ময়ে হয়েছি বিমূঢ়।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রি  একদিকে দেশের উন্নতি হয়েছে ঠিকই, আরেকদিকে হলো দেশের চরম অবনতি।সরকারি বাবুদের নৈতিক স্খলন।সমাজের অবক্ষয়, আইন শৃঙ্খলার অবনতি সেবা মুলক মৌলিক প্রতিষ্টান সমূহের ঘুষ দুর্নীতি, অসদ আচরন, অফিস আদালতে পিয়ন থেকে মেথর মালিরাও আজ সাধারন জনগন এবং প্রবাসিদের সাথে কি ভয়ঙ্কর দাম্ভিাকতা দেখায়। তার উপর গড়ে উঠেছে দালাল চক্র, তারও উপর আবার মাস্তান চক্র।এদেশে আজ খাবার রুটি কিনতে হলেও দালাল লাগে।
প্রিয় নেত্রি আমি ভূক্তভোগি হয়ে আজ একে একে কয়েকটি ঘটনার অবতারনা করছি, শুনুন---
প্রথমে আসি মাইজদী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ব্যপারে।আমি গত নভেম্বরের বিশ তারিখে  বাংলাদেশে যাই।মাইজদী জেল রোডে আমাদের চৌদ্দ পুরুষের ভিটে বাড়ি।আমাদের এলাকার সাধারণ মানুষের বাড়ি এবং খেতি জমিনে নির্মিত হয়েছে মাইজদী পুলিশ লাইন জেল খানা আধুনিক সদর হাসপাতাল, বিদ্যুৎ অফিস হাউজিং সেটেলমেন্টর ভবন গুলো।
আয়ূব থেকে মেজর জিয়া পর্যন্ত সবাই আমাদের ভিটেমাঠি জবর দস্তি হুকুম দখল করে আমাদেরকে ভূমির ন্যর্য্য মূল্য নাদিয়ে এক বাড়ির মানুষকে চৌদ্দ বাড়ি করেছে।অনেকে হয়েছেন ভূমিহীন।যতটুকু দিয়েছেন তাও তিন কিস্তিতে দিয়ে শুধু মাত্র বাজার সদাই খাওয়াছেন।শহর প্রসাড়িত হয়েছে কিন্তু একটি মানুষকে পুর্নবাসন করা হয়নি। এমন কি এলাকার কোন ছেলেমেয়েকে চাকুরি বাকরির ব্যবস্হাও করা হয়নি।আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ চোখ বুঝে এতদিন সহ্য করে আসতেছি।
আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে নির্মিত প্রতিষ্টান সমূহে আজ আমরা নিপিড়িত হচ্ছি কেন?    আমরা  আজ  এই সব প্রতিষ্টানের সেবা থেকে বঞ্চিত হব কেন? যা আমাদের মৌলিক অধিকার।
আমি দেশে যাবার এক সপ্তাহ পরেই বিদ্যুৎ অফিসের কয়েকজন লোক এসে আমার বাড়ির নিচ তলায় বিদ্যুতের দুটা মিটারে সিলগালা করে ভাঁড়াটিয়ার হাতে একটা ফোন নাম্বার ধরিয়ে দিয়ে মালিককে এক সাপ্তাহের মধ্যে যোগাযোগ করতে বলে চলে যায়।আমি ফোন করে টার্মিন নিয়ে গেলাম, কিন্তু সেই এসেসন্ট ইঞ্জিনিয়র সাহেব বিদ্যুৎ অফিসে উপস্হিত ছিলনা, পর পর আমি দশ বার গিয়েও উনার দেখা পেলাম না। এক সপ্তাহ পরে  উনি আবার সন্ত্রসি কায়দায় সাত আটজন লোক নিয়ে এসে আমার বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে চলে যায়।পাঁচদিন পরে তাদের পিছনে গুরে গুরে পরে যুবলীগের এক নেতার ফোনে তাও ঘুষ দেয়ার পরে তারা লাইন দিয়ে যায়।ছয়টা প্রিপেইড মিটারের দামসহ তারা সর্বমোট আমার কাছ থেকে একলক্ষ বিশ হাজার টাকা নেয়।এত টাকা নেয়ার পর ও ছয়টা  প্রিপেইড মিটার নাই বলে  মাত্র দুটা মিটারে ছয় ইউনিটের বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে চলে যায়।একদিন পর লোডশেডিং হয়ে মিটার এবং পানির মঠর জ্বলে যায়। তারপর আবারও অনেক টাকা ঘুষ দেয়ার পরে তারা লাইন ঠিক করে দিয়ে যায়। কিন্তু আর কোন প্রিপেইড মিটার আমাকে দেওয়া হয়নি।সরবমোট ওরা আমার দুলক্ষাধিক টাকা খেয়েছে, এবং ক্ষতি এবং কষ্ট হয়েছে অতুলনিয়।
এই পাঁচদিনে আমার বাসার বয়স্কো লোকেদের ইনজুলিনসহ নানা ঔষুধ পত্র ও প্রিজে থাকা জিনিস পত্র সব নষ্ট হয়ে যায়।পরিক্ষার্থি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার অতুলনিয় ক্ষতি হয়।

দুই,তিনদিন কয়েক হাজার টাকা টেক্সি ভাড়া দিয়ে তহশিল অফিসে গেলাম আমার চরের জমিনের খাজনা দিতে, কিন্তু তহশিলদার শেষ বার আমার খাজনা না নিয়ে আমাকে বললো জমিনটা বিক্রি করে দেন ভালো হবে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রি এটা কেমন ব্যবস্হা আপনিই বলুন। সেখানেও দালাল চক্রের ভিড়।
তিন, গেলাম এনআডি কার্ড বানাতে নিবন্দন অফিসে।অনেক ঝক্কিজামেলা পোহায়ে তাদের কথামত কাগজপত্র জমা দিলাম। ওরা ছয় সপ্তাহের কথা বলে এসএসএসে জানাবে, কিন্তু আড়াই মাসেও আর খবর আসেনা।পরে দালালের মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে ছবি তুলে দিয়ে আসলাম।তাও  আবার তাদের ভয়ঙ্কর দম্বোউক্তি দেখে আমি অবাক হলাম।মাননীয় প্রধানমন্ত্রি এবার আপনি বলুন আমাদের কি করা।
চার,এবার আসুন থানার ব্যপারে।থানা ঘরের দেয়ালে সাইনবোর্ড টাঙ্গানো আছে সেবাই পুলিশের ধর্ম, এবং কাউকে ঘুষ দিবেন না ইত্যাদি দৈববাণী।কিন্তু সত্যিই কি তাই।সেখানেও দালাল চক্রের ভিড়।পুলিশের ঘুষ খাওয়ার ধরন পাল্টিয়েছে। তারা নিজের হাতে না খেয়ে দালাল চক্রের হাতেই ঘুষ খায়।এমন সমাজে সব অঘটনের মুলহোতা পুলিশেরাই।প্রতিটা অঘটনের সাথে তারা জড়িত।তাদের ইশারায় এবং আশকারায় চলে সব কিছু।
পাঁচ,গেলাম করোনা টেষ্ট করাবার জন্য। সেখানেও সঙ্গবদ্ধ দালাল চক্র সক্রিয়।

                      চলবে---

No comments:

Post a Comment

অজ্ঞসব জনপ্রতিনীধি,

সত্যই শক্তি, সত্যই সুন্দর,