সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

ভিন্ন মতালম্বিকে হত্যা করা কি ইসলামে জায়েজ আছে?


গত কয় বছর ধরে বাংলাদেশে বেশ কয় জন মুক্তমনা তরুন  ব্লগার কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক এমন কি ভিন্ন মতালম্বি ধর্মিয় কয়জন নেতাকে চাপাতির কোপে আর খঞ্জর কিংবা তলোয়ার দিয়ে নিজ গৃহে জবাই করে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে।অনেককে আবার কোপায়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তারা কেউ কেউ কোন ভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও জীবনের তরে পঙু হয়ে বেঁচে আছে।

সম্প্রতি জাগৃতি প্রকাশনার কর্নদার ঢাকা ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক জনাব আবুল কাশেম ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে জনাব ফয়সল আরেফিন দীপনকে আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিজ অফিস কক্ষে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছে।শুদ্ধশ্বরের প্রকাশক সহ আরো তিন জনকেও কোপায়ে আহত করা হয়েছে।বেশ কয় বছর আগে একুশের বই মেলায় প্রথাবিরুধি বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক অধ্যাপক হুমাউন আজাদকে কোপায়ে রক্তাক্ত করা হয়।তার কিছুদিন পরেই তিনি মৃর্ত্যুর কোলে ডলে পড়েন। ইসলামকে অবমাননা করে লেখালেখির কারনে লেখিকা তাসলিমা নাসরিনকে স্বদেশ চাড়তে হয়েছে প্রায় দুযুগ আগে।

এরকম খুন খারাবি যে শুধু বাংলাদেশে হচ্ছে, ঠিক তা না। বর্তমান বিশ্বের ৫৭টা মুসলিম দেশের মধ্যে প্রায় সব দেশেই সকল প্রথা বিরুধি প্রকৃতি বিরুধি, ধর্ম বিরুধি ভিন্ন মতালম্বি কবি সাহিত্যিক, সাংবাদিক মুক্তমনা ব্লগার শিল্পি নেতা নেত্রিরা নির্মম ভাবে খুন হচ্ছে।সকল দেশেই আজ উগ্রবাদি জঙ্গীবাজ সন্ত্রাসবাদী, চরম পন্থীর উত্থান ঘঠেছে।এমন কি অনেক দেশে নাস্তিকতা বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনও প্রণয়ন করা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, আসলে কি ভিন্ন মতালম্বিকে হত্যা করা ইসলামে জায়েজ বা অনুমোদন আছে?



উত্তর হলো, হ্যাঁ একশ পার্সেন্ট ইসলাম তা অনুমোদন করে।ভিন্ন মতালম্বি বলতে, কোরআন সুন্নাহ এবং আল্লাহ ও তাঁর  প্রিয় রাসুল হযরত মুহাম্মদ সঃ এর অবমাননা, অশ্বিকার,কারীকে হত্যা বা কতল করা ইসলামে জায়েজ আছে।প্রবিত্র কোরআনেও কিসাস নামে আইন আছে।খুনের বদলা খুন।

স্বয়ং আমাদের প্রিয় নবী নিজেই বলেছেন আমি তোমাদের  একদিকে দয়ার নবি, আরেক দিকে যুদ্ধের নবী।

ফিকাহ শরিফের রচয়িতা ঈমাম মালিকি রহঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের প্রিয় নবীর গায়ের জামার বোতামের অবমাননা করবে,তাকেও গর্দান কেটে হত্যা করা ইসলামে জায়েজ আছে।

এমনকি প্রবিত্র কোরআন শরিফের সুরা আযহাব সুরা ইমরান সহ কয়টি সুরাতে আল্লাহ সুবহান তাআলা কয়েকটি আয়াত নাযিল করেছেন সে ব্যপারে।

তাই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ  স্বয়ং নিজে আব্দুল্লাহ ইবনে খাতাল ও তার দুই দাসীকে প্রকাশ্যে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন।এমনকি তারা যদি কাবার গিলাপ ধরে ঝুলেও থাকে তাহলেও হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মক্কা বিজয়ের পর, মহা নবী বেশির ভাগ লোককে বিনা বিচারে মুক্ত করে দিলেও তাঁর নির্দেশে একটি ব্ল্যাকলিষ্ট তৈরি করা হয়েছিল।সেই লিষ্টে যার যার নাম ছিল প্রত্যেককে হত্যা করা হয়েছিল মহা নবীর নির্দেশেই।

সে সময় মক্কা নগরিতে কোন অপরাধি যদি কাবা শরিফের গিলাপ ধরে ঝুলে থাকতো, তবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হতো।কিন্তু আল্লাহর রাসুল সে ব্যপারে বলেন এটা মুসরিকদের আইন। তাদেরকে হত্যা করো, যদি তারা কাবার গিলাফ ধরে ঝুলেও থাকে তবুও।

ইসলামে নারী শিশু হত্যা নিসিদ্ধ করা হলেও স্বয়ং আল্লাহর রাসুল বেশ কয়জন নারীকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন।তারা ছিল কোন ধরনের নারী, যারা মুসলমানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে, এবং ব্যবিচারে লিপ্ত থেকেছে, তাদেরকে।

এছাড়াও কাব বিন আশরাপ, আবু রাপে, উথবা, নাদার ইবনে আবি, হারিছ সহ অসংখ্য কবি সাহিত্যিক মুসরিক ও কোরআন সুন্নাহর অবমাননা কারী, তিরষ্কার কারি, অবিশ্বাস কারিকে প্রকাশ্যে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আল্লাহর প্রিয় নবী।

আমার কথা হলো, এখন চলছে একবিংশ শতাব্দি।ইসলাম ধর্ম হলো একটা প্রতিষ্টিত এবং পরিক্ষিত ধর্ম।সমগ্র বিশ্বের প্রায় দেড়শ কুঠি মুসলমান ৫৭টা দেশে মনে প্রানে ইসলামকে ভালবাসে।মানুষের ধর্মিয় অনুভূতি এখন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। সে ধর্মকে অবমাননা তীরষ্কার করা কোন মতেই গ্রহন যোগ্য নয়।

আর জঙ্গীবাজ উগ্রবাদীদেরকে বুঝতে হবে এখন দেশে কোন খালিফা রাজত্ত বা ইসলামি শাসনতন্ত্র কায়েম নেই।দেশে চলছে একটা গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্হা।দেশের বেশির ভাগ মানুষই শান্তি কামি জনতা।সুতারাং দুচারজন সিমিত সংখ্যাক জঙ্গীবাজ মিলে গুপ্ত হামলা করে দুচার জন মুক্তমনা বা নাস্তিককে হত্যা করে ইসলামের তো কোন উপকার হবে না, বরং নিজেরাই থাকবে আইনের চোখে চরম অপরাধি।

----ফারক, জার্মানী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

alles gute

ভিন্ন মতালম্বিকে হত্যা করা কি ইসলামে জায়েজ আছে?

গত কয় বছর ধরে বাংলাদেশে বেশ কয় জন মুক্তমনা তরুন  ব্লগার কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক এমন কি ভিন্ন মতালম্বি ধর্মিয় কয়জন নেতাকে চাপাতির কোপে আর খঞ...