২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তঃজাতিক মাতৃভাষা দিবস।বাঙ্গালী জাতির গর্বের একটি দিন।প্রথমে বাংলা ভাষার উপর রচিত একটি সংগীত শুনুন।তারপর আলোচনায়--
লাল সবুজের ঝলোমলো মেলায়,হরিৎ মহুয়ায়,সবুজ ঘাঁসের ডোগায়,নদীর বুকে বুকে, শিশুর মুখে মুখে, পাখির সুরের মুর্চনায়,ফুলের অধর কোনায়,আকাশের সন্ধ্যা তারায়,রাতের জোসনায়,বাংলা বাঁচবে বাংলায়,আমাদের বাংলা ভাষা বাঁচবে বাংলায়//
করেছি কতো সংগ্রাম,করেছি কতো যুদ্ধ,এ বাংলার জন্য /দিয়েছি কতো রক্ত,মৃর্ত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছি শক্ত,আমরা অনিক অনন্য/বাংলা মোদের মায়ের ভাষা,বাংলা মোদের বাঁচার আশা,পলকে পলকে বাংলা মোদের দুর্বিনীত স্বপ্ন দেখায়//
বাংলা মোদের অমর ইতিহাস, বাংলা মোদের স্বপ্ন বিলাশ /বাংলায় মোরা লিখিপড়ি,বাংলায় করি হৈচৈ আনন্দ উল্যাস /কেঊ কভূ কেড়ে নিতে পারবেনা,কাউকে কেড়ে নিতে দিবনা, না-না-না দিবনা,বাংলাকে মোরা যতনে রাখবো মনের মনিকোঠায়//
অ আ ক খ গ ঘ--আ-মরি বাংলা ভাষা,
১,বর্তমান পৃথিবীতে জাতিসংগের সদশ্যভূক্ত ১৯৫টি দেশের মধ্যে একমাত্র ভাষার উপর ভিত্তি করে জন্ম নেওয়া স্বাধীন রাষ্ট্রের মধ্যে অন্যতম প্রধান রাষ্ট্র হলো আমাদের সবার প্রিয় এই বাংলাদেশ।আমাদের অফুরন্ত গর্বের কোন অন্তঃ নেই এই দেশকে নিয়ে।আমরা সবাই কি এবার সমশ্বরে বলতে পারি না- জয় বাংলা-!জয় হউক অমর ২১-!
জাতিগোষ্টির নামে, রাজা বাদশার নামে কিংবা দেবদেবির নামে কল্পনা প্রসুত অনেক দেশের নাম করন করা হয়েছে, কিন্তু আমাদের দেশটাই একমাত্র ব্যতিক্রম।ভাষার ভিত্তিতে,ভাষার নামে, ভাষার দেশ, মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ।বলা যায় ভাষা রাষ্ট্র।
আমাদের এই ভাষা আজ আন্তর্জাতিক ভাবে সিকৃত। আমরা কেউ সঠিক ভাবে জানিনা, কবে কিভাবে আমাদের এই বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছিল।তবে নেপালের রাজ দরবারে আবিষ্কৃত বাংলা ভাষায় রচিত চর্চাপদ থেকে অনুপ্রানিত হয়ে ধারণা করতে পারি যে আমাদের বাংলা ভাষা অনেক অনেক পুরানো।ধারণা করা হয় আদি ব্রম্মালিপি থেকেই বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে।
সেই যাই হউক,বর্তমান বিশ্বে আধুনিক সভ্য দেশ এবং পূর্ন গনতান্ত্রিক দেশ গুলির অবস্হান হলো ইউরোপ মহাদেশে।প্রচীন গ্রীক হলো দার্শণিকদের চারণ ভূমি।গ্রীকের মত এত দার্শণিক পৃথিবীর আর কোন দেশে জন্ম গ্রহন করেননি।বর্তমান পৃথিবী আজো গ্রীক দার্শণিক মতবাদ ধারা প্রভাবিত।কিন্তু আশ্চার্যের ব্যপার হলো এই দার্শণিকরা বেশির ভাগই ছিল অশিক্ষিত, কিন্তু অসাধরণ জ্ঞানের অধিকারি।তার চেয়েও আশ্চার্যের ব্যপার হলো প্রাচীন এবং বর্তমান সভ্যতা এবং দার্শণিকের তীর্থক্ষেত্র এই ইউরোপের তথা গ্রীক জাতি গোষ্টিকে ভাষা এবং কলম কালি কাগজের ব্যবহার শিখিয়েছিল ফিনিশীয় জাতি গোষ্টি।ফিনিশীয়রা ২২টা বর্ণ নিয়ে ব্যঞ্জনবর্ণ আবিষ্কার করলে গ্রীক দার্শণিকরা শ্বরবর্ণ জুড়ে দিয়েই আধুণিক ভাষালিপি পদ্ধতি শুরু করে।
এই গ্রীকদের কাছ থেকে বর্ণমালা দ্বার করে আবার ইতালীয়রা রোমান সভ্যতার বিস্তার ঘটায়।সভ্যতা বলি আর অসভ্যতা বলি একসময় ইতালী ছিল বিশ্বে প্রথম ক্ষমতাধর রাষ্ট্র।শুনতে অবাক বিশ্ময় লাগলেও ইতালী নামটাও গ্রীকদের দেওয়া।ইতালী শব্দের অর্থ চর্মাসার গরুর চারণভূমি।আবার গ্রীক নামটাও ইতালীয়দের দেওয়া।ইতালীয়ান শব্দ গ্রাসিয়া অর্থ ধন্যবাদ থেকে গ্রীক নামকরন হয়েছে।এটা নিয়ে অনেকেই কনফিউস বা দ্বিধাধন্ধে ভোগেন যে এই দুজাতির মধ্যে কোন সভ্যতা আগে বিকশিত হয়েছিল। রোমান সভ্যতা না গ্রীক সভ্যতা?এর যতাযত উত্তর হলো গ্রীক সভ্যতা।গ্রীক সভ্যতা আগে বিকশিত হলেও এই রোমানরা আবার দীর্ঘদিন গ্রীকদেরকে শাসন করেছে।এই সেদিন গ্রীকরা রোমানদের কাছ থেকে পুর্নস্বাধিনতা লাভ করেছে।আরো বিশ্ময়ের ব্যপার হলো প্রায় সারা দুনিয়া শাসন করা ব্রিটিশরাও রোমানদের কাছে একসময় পরাধিন ছিল। রোমানদের গড়া বস্তি লন্ডনিয়ম থেকেই আধুনিক লন্ডনের নাম করন হয়।
আমরা জানি যে প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মিশরীয় সভ্যতা। অর্থ্যাৎ ফ্যারাউনদের সভ্যতা।তারা ভাষা ব্যবহার করতো চিত্রলিপি ধারা।তারপর আসে সুমেরু সভ্যতাগুলোর নাম।এই অঞ্চলের ব্যবিলীয়রা ব্যবহার করতো কোণিকলিপি।ব্যবিলিয়ন রাজা হাম্মুরাবি সে যুগে কৌণিক শিলালিপিতে লিখা আবিষ্কিৃত ১৮০টি আইনের ধারা আধুনিক আইনেও তা প্রজয্য।
ক্যালডীয় সভ্যতার কর্নধার নেবুচাদ নেজার শূন্য আবিষ্কার করে আধুনিক ভাষা সাহিত্য ও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে তরান্মিত করে বিশ্ময় সৃষ্টি করে দিয়েছেন।ঘন্টা দিন সপ্তাহ পক্ষ মাস বৎসর সৌরজগতের মৌলিক ধারণা ও গ্রহ গুলি ক্যালডীয় সভ্যতারই আবিষ্কিৃত।তবে প্রচলিত বার মাসের ইংরেজি নামকরন করেন রোমানরা।
আমার কাছে সবচেয়ে আশ্চার্যের বিষয় হলো যে ইউরোপিয়ানরা কাগজ কলম কালির ব্যবহারই জানতো না, সে ইউরোপিয়রা কেমন করে আজ এত সভ্য হলো-? আমরা আরো দেখতে পাই যে রেনেসাঁর যুগে এসে আধুনিক সকল দার্শণিকের জন্ম হলো শুধু এই ইউরোপেই। বিশেষ করে ফ্রান্স, ইতালী এবং জার্মানীতেই।
আর আমরা বাঙ্গালী জাতি,আমাদের কৃষ্টি কালচার এত উন্যত থাকার পরেও আমরা পড়ে রলাম কোথায়-?আজ সমগ্র বিশ্বে আমরা অষ্টম বৃহত রাষ্ট্র হিসেবে সুপরিচিত।সারা বিশ্বে চড়িয়েচিটিয়ে আছে প্রায় ৩৫ কোটি বাঙ্গালী, কিংবা বাংলা ভাষাবাসি। আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্রের অনেক ভাষার মধ্যে ব্যবহৃত হয় শুদ্ধ বাংলা শব্দ। আন্দামান নিকোভার লোকেরা বাংলা ভাষাবাসি।সমগ্র বিশ্বের বাংলা ভাষাবাসির মধ্যে অভিন্ন সোহর্দপুর্ন সম্প্রীতি অতি প্রয়োজন।এই বাংলা ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি যুদ্ধ করেছি এই ভাষার নামেই বাংলাদেশ নামকরণ করেছি। আসুন আমরা আমাদের প্রাণের প্রিয় এই বাংলা ভাষার প্রতি যতাযত সন্মানবোধ প্রদর্শন করি।সবাই সর্বক্ষেত্রে বাংলায় লিখিপড়ি কথা বলি।অমর হউক একুশ,অমর হউক আটই ফাল্গুন।জয় বাংলা।
------ ফারুক
No comments:
Post a Comment