সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৭

নষ্টমাথার নষ্টরাজনীতি----৪










                                          বি এন পি---?   

বি এন পি----র--- আদর্শ বা মুলনীতিঃ-


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মত   বিএনপির ও মুলনীতি হলো--৪টা, তবে একটু আলাদা ধর্মনিরপেক্ষর জায়গায় তারা আল্লাহর উপর বিশ্বাস জুড়ে দিয়েছে। যেমনঃ--১,আল্লাহর উপরবিশ্বাস ২,গনতন্ত্র। ৩,সমাজতন্ত্র।  ৪,জাতীয়তাবাদ।             

বাংলাদেশের সংবিধান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের নির্দেশে ১৯৭২ সালে ৩৪জন বুদ্ধিজিবী ও আইনজিবী মিলে খুবি অল্প সময়ের মধ্যেই প্রণিত হয়েছিল। আমরা সবাই একথা জানি যে ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি পাকিস্তানের  কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জাতির জনক স্বদেশের মাটিতেই ফিরে এসই ঘোষনা দেন যে তিনি জাতিকে একটি সংবিধান উপহার দিবেন।  সে কথা অনুযায়ি  বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রণিত হয়েছিল আমাদের সংবিধান।

সেই সংধিানেরও মুলনীতিও ছিল চারটা। যেমন-- গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ও ধর্মনিরপেক্ষতা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও মুলনীতি হলো এই চারটি। জেনারেল জিয়াউর রহমান নতুন দল বিএনপি গঠন করার পর  সংধিানের ধর্মনিরপেক্ষতা সরিয়ে আল্লাহর উপর বিশ্বাস শব্দটি জুড়ে দিয়েছে।আর এই জিনিসটা বিএনপি করেছে সংবিধান রচিত হবার  সাত বছর পরে।অর্থ্যাৎ বিএপি নামে দলটি গঠিত হয়েছে ১৯৭৮ সালের ১-লা সেপ্টেম্বরে।তখন স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়া সংবিধানে বিছমিল্লা ও জুড়ে দিয়েছিল।

এখানে একটু বিস্তারিত বলতে হচ্ছে আমাকে।বিএনপির প্রতিষ্টাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান ছিল স্বাধিন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম এবং নিকৃষ্ট একজন স্বৈরচার। বঙ্গবন্ধু হত্যার তিন মাস্টার মাইন্ডের একজন ছিল এই তথাকথিত জেনারেল জিয়াউর রহমান।

জাতির জনক স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেই বুঝতে পেরেছিলেন যে এই জিয়া উচ্চ বিলাশি আকাঙ্খা পোষন করেন। তার মতিগতি ভাব চক্কর খারাপ।তার চোখেমুখে ফুটে উঠে ক্ষমতার প্রতি লৌলপ দৃষ্টি বা লিপ্সা।দুরদৃষ্টি সম্পর্ন বঙ্গবন্ধু চিন্তা করলেন যে স্বাদিন বাংলাদেশে যেন পাকিস্তানের  আইয়ূব খানের মত কোন স্বৈরচারের উত্থান না হয়।তাই সিদ্ধান্ত নিলেন এই জেনারেল জিয়াকে বিদেশে রাষ্ট্রদুত করে পাঠিয়ে দিবেন।এই খবর শুনে জিয়া গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সামনে প্রবিত্র কোরআন ছুয়ে কছম খেয়ে বললেন তিনি কোনদিন বঙ্গবন্ধুর সাথে বেঈমানী করবেন না।তাই জাতির জনক তাকে আর বিদেশে না পাঠিয়ে ডিপুটি চীপ জেনারেল করে দেশেই রেখে দিলেন।

আর সেনা বাহিনী প্রধান জেনারেল  করলেন জিয়া থেকে এক র‌্যাং জুনিয়র সফিউল্লাকে।তাই ভিতরে ভিতরে জিয়া ছিল অসন্তোশ।

বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পরপরই জিয়া সফিউল্লাকে সরিয়ে চীপ জেনারেল হয়ে যান রাতারাতি।দুসপ্তাহ পরে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম মাস্টার মাইন্ড মোস্তাককে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে  মার্শাল,ল জারি করে প্রধান বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি ঘোষনা করলেন।

লৌহমানব নামে খ্যাত আরেক স্বৈরচার আইয়ুব খানের আদলে জিয়া সদ্য স্বাধীন দেশে রাতদিন কারফিউ আইন জারি করে স্তম্বিত করে দিয়েছিল পুরো জাতিকে।সব রাজনৈতিক দলকে নিশিদ্ধ করে দিয়ে মানুষের বাক স্বাধিনতাকে হরন করলেন তিনি।সে সময় দুজন যুবক এক সাথে চলাফেরা করতে পারতনা।সারা বাংলাদেশ যেন আবার সেই একাত্তরের  যুদ্ধের বিভিশিখাময় দিনে ফিরে গেল।

দেশের মানুষ তখন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ঢাকা শহরে কি হচ্ছে দেশের মানুষ কিছুই জানতে পারছে না।এরি মাঝে কারফিউর  অন্তরালে তার প্রতিধন্ধি সব জেনারেলকে কারাগারে বন্দি অবস্হায় নির্মম ভাবে হত্যা করে যাচ্ছে, বিশেষ করে বীর মুক্তি যোদ্ধাদেরকে,কেউই তা জানতে পারছেনা। ক্ষমতার পাদপ্রদিপে এসে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও মিলিটারি অফিসারকে নির্মম ভাবে হত্যা করলো এই খুনি জিয়া।তিনমাস দশদিন পরে আবার প্রেসিডেন্ট সায়েমকে অসুখের অজুহাত তুলে বন্দুকের নল দেখিয়ে জিয়া নিজেই সর্বময় ক্ষমতা দখল করে নিজে নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষনা করলেন। অপর দিকে তিনি নিজেই সেনা প্রধান হিসেবেও অধিষ্টিত।অবক বিশ্ময়ে জাতি শুধু নিরবে  চেয়েই রলো।সদ্য স্বাধিন দেশের মানুষ যেন আবার পরাধিন হয়ে পড়লো।

জিয়া নিজেকে স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট  ঘোষনা করে  হ্যাঁ--না.. নামে প্রহশনের একটা নির্বাচনের আয়োজন করলো।হ্যাঁ মানে জিয়া নিজে, আর না মানে ও জিয়া। কেউ ভোটের জন্য দাঁড়াতে পারে নাই।দাঁড়াবার কারো কোন অধিকারও ছিল না। এবার তিনি পাকাপাকি পরিশুদ্ধ প্রেসিডেন্ট হয়ে মসনদে বসলেন।গনতান্ত্রিক বিশ্বে এটা ছিল একটা নজিরবিহীন ঘঠনা।স্বাধিন দেশের মানুষ ও এই প্রথম দেখল এমন আজব ভোটাভুটির নির্বাচন।

 খালি মাঠে তিনি নিজে একাই গোল দিয়ে নিজেই জিতে গেলেন।ভোটের পার্সেন্ট দেখালেন ৯৭% ভোট।এই  বিপুল ভোটে নিজেকে বিজয় ঘোষনা করে উর্দি চেড়ে তিনি  কোট সাপারি পড়তে শুরু করলেন।অল্প  কিছুদিন পরেই তিনি রাজকোষের কাড়িকাড়ি টাকাকড়ি খরছ করে প্রথমে জাগদল নামে একিট রাজনৈতিক প্লাটফরম গঠন করলেন। পরে ১৯৭৮ সালের আগস্ট মাসে জাগদল বিলুপ্ত করে ১লা সেপ্টেম্বরে এসে রমনা রোস্তোঁরায় ১৮ সদস্য নিয়ে বিএনপি যাত্রা শুরু করলেও ১৯ তারিখে এসে আবার ৭৬ সদস্য নিয়ে  বিএনপিকে পুনঃঘটন করেন। 

বিএনপি গঠন করে তিনি রাজকোষের মোটা অঙ্কের লোভ দেখিয়ে, ক্ষমতার চিটেপোটার লোভ দেখিয়ে গুলশান বনানী ধানমন্ডিতে প্লট এপার্টমেন্টের লোভ দেখিয়ে আদর্শবাদী রাজনৈতিক দলগুলিকে ভেঙে নিজের গড়া দল বিএনপিতে ভিড়াতে লাগলেন।নিষিদ্ধ যুদ্ধাপরাধিদেরকে পুর্নবাসন করতে লাগলেন।প্রধান যুদ্ধাপরাধি গোলাম আযমকে দেশে ফিরায়ে এনে নাগরিকত্ত ফিরায়ে দিলেন।রাজাকার শাহা আজিজকে প্রধান মন্ত্রি বানালেন।আর অপর দিকে বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে বিদেশে বাংলাদেশ দুতাবাসে চাকুরির সুবন্দোবস্ত করে দিলেন। এমন কি ১৯৭৯ সালের ৯ই এপ্রিল এক ফরমান জারি করে তিনি ইনডেমনিটি আইন সংসদে পাশ করে নেন।এই কুখ্যাত আইনের মাধ্যমে তিনি ১৫ই  আগষ্টের পর থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ সকল খুন খারাবির কোন বিচার করা যাবেনা, এমন কি কোন কথা বলা যাবেনা।

তারপরে বিএনপি নামের কেন্টেরমেন্টে জন্ম নিওয়া দলটি অল্পকিছুদিনের মধ্যেই একে একে ১১টা দল গঠন করে ১২টা দলে হাত দিলেনিআর সেটা ছিল গ্রাম সরকার পদ্ধত্বি।১৯৮১ সালের ৩০শে মে জিয়ার নির্মম মৃর্ত্যু হলে সেটা ভেস্তে যায়।

 

--চলবে---

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

alles gute

গীত লতা Lyricism. : কবিতা

গীত লতা Lyricism. : কবিতা :                                                                                               ...